ক্রাইম রিপোর্টারঃ
রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও গর্ভপাত করানোর অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মামলার দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে অভিযুক্তরা। উল্টো মামলা তুলে নিতে বাদীকে দেওয়া হচ্ছে হুমকি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৯ এপ্রিল পীরগাছা থানায় ওই গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে স্বামী শাহ্ মো. আরিফুর রহমান সবুজসহ চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি, ফলে আতঙ্কে রয়েছেন ভুক্তভোগী ও তার পরিবার।
ঘটনার দিন গৃহবধূর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে রক্ষা করে। পরে ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ এসে গৃহবধূকে উদ্ধার করে। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (OCC) চিকিৎসা নেওয়া হয়।
মামলায় আসামি করা হয়েছে—স্বামী শাহ্ মো. আরিফুর রহমান সবুজ (বর্তমানে এনআরবিসি ব্যাংকের কর্মী), শ্বশুর শাহ্ মো. শাখাওয়াত হোসেন (পাওটানা ফাজিল মাদ্রাসার প্রাক্তন শিক্ষক), শাশুড়ি মোছা. আঞ্জুমান আরা বেগম ও দেবর শাহ্ মো. আশিকুর রহমানকে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রংপুর মহানগরীর কেরানিরহাট এলাকার মহুবার রহমানের মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের জেরে ২০১৮ সালে আরিফুর রহমান সবুজ বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। পরে ২০২১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই পরিবারের সম্মতিতে আবারও বিবাহ হয়।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ অভিযোগ করে বলেন, “বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দিচ্ছে। টাকা না দেওয়ায় নিয়মিত মারধর করত। এমনকি আমাকে গর্ভধারণ না করতে বাধ্য করে জন্মনিয়ন্ত্রণ ওষুধ খাওয়ানো হতো। চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর ওরা বেধড়ক মারধর করে এবং জোর করে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত ঘটায়।”
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নুর আলম বলেন, “আসামিরা বর্তমানে পলাতক রয়েছে। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।”
সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) আসিফা আফরোজ আদরী বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। দ্রুতই আইনি অগ্রগতি হবে।”