স্টাফ রিপোর্টার, পাবনা:
পাবনার চাটমোহরে একটি ক্লাব অফিস ভাঙচুরের অভিযোগে দায়ের করা মামলাকে মিথ্যা দাবি করে হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন অভিযুক্তরা। মূলগ্রাম নীচ বাজার এলাকায় অবস্থিত ‘আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংঘ’ নামক ক্লাবকে কেন্দ্র করে এই মামলার সৃষ্টি হয়েছে, যার বাদী সোহেল রানা নামের একজন ব্যক্তি।
গত ৮ মে পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-০৪-এ দায়ের করা মামলাটির নম্বর সিআর ২৬৯/২০২৫ (চাটমোহর)। এতে নাম উল্লেখ করা হয়েছে ১৩ জনের এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার আসামিদের মধ্যে বাদীর আপন দুই ভাই শামীম হোসেন রাঙ্গা ও রিমাল হোসেন, রিমালের স্ত্রী-সন্তানসহ বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা রয়েছেন।
সোহেল রানা তার অভিযোগে বলেন, গত ২৫ এপ্রিল রাতে জমির বিষয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে অভিযুক্তরা তাকে ও তার লোকজনকে মারধর করে এবং ক্লাব অফিসে ভাঙচুর চালায়। এসময় চেয়ার-টেবিল ভাঙা, ব্যানার ছেঁড়ার অভিযোগ তোলেন তিনি। তার দাবি, এতে প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সরেজমিনে ভিন্ন চিত্র
তবে সোমবার (১২ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অফিসের কোনো ভাঙচুরের চিহ্ন নেই। ব্যানার, ফেস্টুন ও সাইনবোর্ড অক্ষত রয়েছে। অফিসের ভেতরে কিছু চেয়ার শুধু কাত করে রাখা হয়েছে, কিন্তু ভাঙচুরের আলামত মেলেনি।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনার দিন কোনো হামলা হয়নি। বরং তদন্ত কর্মকর্তা আসবেন শুনে ভাঙচুরের ‘নাটক’ সাজাতে নিজেই চেয়ার কাত করে রেখে যান বাদী সোহেল রানা। স্থানীয়রা আরও জানান, সোহেল ও তার বড় ভাই রাঙ্গার মধ্যে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধ থেকেই মামলার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও বিভ্রান্তি
অভিযুক্ত হযরত আলী, যিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সম্পাদক ছিলেন, বলেন, “সোহেল রানা কখনো বিএনপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। এখন হঠাৎ করে নিজেকে দলীয় পরিচয়ে তুলে ধরে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছেন।”
অন্য আসামি ছুরমান আলী বলেন, “এটি দুই ভাইয়ের পারিবারিক বিরোধ। সেটিকে রাজনৈতিক রঙ দিয়ে আমাদের জড়ানো হয়েছে। এর ভিডিও প্রমাণও রয়েছে।”
প্রশাসনের অবস্থান
চাটমোহর থানার ওসি মনজুরুল আলম বলেন, “ঘটনাটি আমাদের জানা নেই। কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। আদালত তদন্তের নির্দেশ দিলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
সোহেল রানার ব্যাখ্যা
বাদী সোহেল রানা বলেন, “আমার পরিবারকে মারধর করা হয়েছে। আমরা মীমাংসার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু কোনো উদ্যোগ না আসায় বাধ্য হয়ে মামলা করেছি।” তবে অফিস ভাঙচুরের দৃশ্য দৃশ্যমান না থাকার বিষয়ে তিনি সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি।