জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও ঘুষ-দুর্নীতি অভিযোগ তুলেছেন ওই ইউপির এক সদস্য।
গতকাল বৃস্পতিবার রাতে ফেসবুক লাইভে বক্তব্য দেওয়া মো. সেলিম হোসেন জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওর্য়াডের সদস্য। তিনি উপজেলার কাশিড়া গ্রামের বাসিন্দা। ওই ইউপির চেয়ারম্যানের নাম হাবিবুর রহমান। তাঁর বাড়ি বারইল গ্রামে।
ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন বলেন, ‘কাবিটা প্রকল্পের আওতায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে দীঘিপাড় গ্রামে ইট–সোলিং রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছিল। এ প্রকল্পের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান। এটি আমরা কেউ জানতাম না। মিস্ত্রিরা রাস্তার কাজ করছিলেন। এ রাস্তার কাজে ভাঙাচোরা ইট ব্যবহার করা হচ্ছিল। লোকজন নিম্নমানের ইট সোলিং রাস্তার কাজের কথা আমাকে জানান। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ভাঙাচোরা ইট দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করতে দেখে ছবি তুলেছি। ভালো ইট দিয়ে কাজ করার কথা বলেছি। এতে ইউপি চেয়ারম্যান আমার ওপর চরম ক্ষুব্ধ হন। তিনি আমার বিরুদ্ধে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করার অভিযোগ তুলে আমাকে সময় বেঁধে দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। আমি বৃহস্পতিবারে নোটিশের জবাব দিয়েছি। ইউপি চেয়ারম্যান তা গ্রহণ করেননি। ইউএনও কার্যালয়ে গিয়ে কারণ র্দশানোর নোটিশের জবাব দিয়েছি।’
ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না দাবি করে সেলিম হোসেন বলেন, মাতৃত্বকালীন ভাতার সুবিধাভোগীদের নাম তালিকায় ওঠাতে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন চেয়ারম্যান। অনেকের এখনো মাতৃত্বকালীন সুবিধাভোগীর তালিকায় নাম ওঠেনি। তিনি তাঁদের টাকাও ফেরত দেননি। আমার ওয়ার্ডে ছয়জন মাতৃত্বকালীন ভাতা পেতেন। তাঁদের মুঠোফোন নম্বর পরির্বতন করা হয়েছে। কেউ এক বছর, আবার কেউ ১০ মাস ধরে ভাতা পাচ্ছেন না। ভাতাভোগীদের ৫৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
সেলিম হোসেন জানান, মাতৃত্বকালীন ভাতাভোগী এক নারীর টাকা মেরে দেওয়ায় ওই নারী আক্কেলপুরের ইউএনওর কাছে লিখিত দিয়েছিলেন। এরপর ১৫ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়। এ ছাড়া অনেক ভাতাভোগীর পুরো টাকা এখনো পাননি। এ ছাড়া ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সাত টন জিআর বরাদ্দ হয়েছিল। ইউপি চেয়ারম্যান চালের পরিবর্তে কাউকে ৪ হাজার, কাউকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন।
ফেসবুক লাইভে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আরও নানা অভিযোগ আনেন ওই ইউপি সদস্য। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের অনিয়ম ও ঘুষ-দুর্নীতির তথ্য–প্রমাণ আমার কাছে আছে। আমি ফেসবুক লাইভে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো অসত্য কথা বলিনি।’
অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএনপি–সমর্থিত গোপীনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমার সঙ্গে ইউপি সদস্য সেলিম হোসেনের মতবিরোধ আছে। তিনি রাস্তা নির্মাণের কাজ বন্ধ করেছিলেন। এ কারণে তাঁকে কারণ দর্শনোর নোটিশ দিয়েছি। বেঁধে দেওয়া সময় অতিবাহিত হওয়ায় তাঁর জবাব গ্রহণ করা হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আমার বিরুদ্ধে ফেসবুকে লাইভে এসে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন কথা বলেছেন।’