মনির হোসেন, বেনাপোল
মেয়ের জন্য জুতা কিনতে এসে পছন্দ করে ফেলেন নিজের জন্যও। যশোরের বেনাপোল বাজার শহরে ছোট আচড়া গৃহিনী শবনম ফারিয়া বলেন, এতো সুন্দর জুতা দেখে শুধু মেয়ের জন্য না, নিজের জন্যও কিনে ফেললাম। বাহাদুরপুর শহিদুল ইসলাম নিজের জন্য কিনলেন ফ্ল্যাট জুতা। চড়া দাম সত্ত্বেয় তিনি জুতা কেনেন নিজের ও পরিবারের জন্য। পুটখালী থেকে আসা নিগার সুলতানা বলেন, সারা বছর জুতা তেমন কেনা হয় না। যা কিনি এসময়েই কিনে নিই। কারন ঈদে আসা জুতায় ডিজাইনের বৈচিত্র্য থাকে বেশি।

উৎসবের সাজ সম্পূর্ণ করতে এক জোড়া জুতা হয়ে ওঠে অপরিহার্য। ঈদের বাকি আর দেড় সপ্তাহ। শার্শা উপজেলা বিভিন্ন প্রান্তের জুতার দোকানে শুরু হয়েছে কেনাকাটার ব্যস্ততা। উৎসবে নিজেকে সুন্দর দেখতে সবাই ভালো বাসেন। সুন্দর একটি পোশাকের সাথে মানানসই জুতা সাজকে পূর্ণতা দেয়। পোশাকের সাথে মিলিয়ে জুতা পরতে অনেকেই ভালোবাসেন। তাই উৎসবের কেনাকাটার তালিকায় বরাবরই জুতা আলাদাভাবে স্থান করে নেয়। ঈদ উপলক্ষে এই বাজারে এসেছে দেশী বিদেশী ব্রান্ডের বিভিন্ন ধরনের জুতা। উৎসবের কথা মাথায় রেখে এসব জুতায় করা হয়েছে জমকালো সব ডিজাইন।
এবারেও কিশোরী, তরুনীদের পছন্দ হাই হিল। মাঝ বয়সীরা বরাবরের মতোই সেমি হিল ও ফ্ল্যাট জুতাতেই স্বচ্ছন্দ। এছাড়াও শিশুদের জন্য দেশি বিদেশী নানান ধরনের জুতায় সাজানো হয়েছে জুতার শোরুমগুলো। পুরুষদের জন্য ব্যতিক্রমী ডিজাইনের ভিয়েতনামী ব্র্যান্ড এর জুতা জেটি ও জর্ডান থ্রি পাওয়া যাচ্ছে শহরের বিভিন্ন নন ব্র্যান্ড শোরুমে। বিভিন্ন বয়সী নারী, পুরুষ ও শিশুরা বাহারি সব জুতা দেখে আগ্রহী হচ্ছেন কেনাকাটায়। তাই ঈদ বাজারে শুরু হয়েছে জুতার কেনাকাটা। তবে বিক্রি নিয়ে সন্তুষ্ট নন বিক্রেতারা। ভালো বিক্রির জন্য চাঁদ রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান তারা।
কোথায় কেমন দাম
নূর সুপার কমপ্লেক্স এপেক্স সু, পেগাসাসসহ বিভিন্ন জুতার দোকানে পুরুষদের হালফ্যাশনের জেটি জুতা পাওয়া যাচ্ছে তিন হাজার ২৫০ টাকায়। জর্ডান থ্রি দুই হাজার ৮০০ থেকে তিন হাজার টাকা। লোফার এক হাজার ৫৫০ থেকে দুই হাজার ৪৫০টাকা। ক্যাজুয়াল সু দুই হাজার ২৫০ থেকে চার হাজার ৫০০টাকা। মেয়েদের জুতা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকায়। শিশুদের জুতা পাওয়া যাচ্ছে ৮৫০ থেকে দুই হাজার ৩৫০টাকার মধ্য।লাল মিয়া সুপার মার্কেট বিউটি শোরুমে মেয়েদের পাম্প সু বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৩০০ থেকে দুই হাজার ২০০টাকায়। একই দামে পাওয়া যাবে হাই হিল। এখানে শিশুদের জুতা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ৮০০টাকায়। পুরুষদের বিভিন্ন জুতা স্যান্ডেল পাওয়া যাবে এক হাজার ৫০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা।
উপজেলা বিভিন্ন নন ব্র্যান্ড শোরুমে মেয়েদের জুতা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকায়। ইটালিয়ান ব্রান্ড লোটো’র বিভিন্ন শোরুমে পুরুষদের জুতা পাওয়া যাচ্ছে সর্বনিম্ন ৮৯০ থেকে দুই হাজার ৬০০ টাকায়। মেয়েদের জুতা ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
যা বলছেন ক্রেতা
বাগআচড়া বাজারে জুতা কিনতে আসা ফাবিহা বুশরা বলেন, ব্রান্ডের শোরুমের তুলনায় নন ব্রান্ড শোরুমে ডিজাইনের বৈচিত্র্য একটু বেশি থাকে। দামও খানিকটা কম। একটু ভিন্ন ডিজাইনের জুতা খুঁজছি, পছন্দ হলেই নিয়ে নেব। নিত্য হাট বেনাপোল আসা মহাসিন হোসেন বলেন, ব্রান্ড বা নন ব্রান্ড সব ধরনের জুতাই পরি। বাজেট কম তাই এবারে নন ব্রান্ডই নিচ্ছি। জেস টাওয়ারে আসা আফরোজা লিনা বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই জুতার দাম খুব বেশি। যে কারনে অনেক ঘুরে ঘুরে কিনতে হচ্ছে। এবারেও বেশ কিছু দোকান ঘুরে জুতা কিনতে হবে মনে হচ্ছে।
যা বলছেন বিক্রেতা
মোঃ উল্লাহ সুপার মার্কেট লেবাটি সু- সত্ত্বাধিকারী শাহজাদা হাসান বলেন, বিক্রি ভালো হচ্ছিলো, মাঝের কয়েকটি রোজায় একটু কমেছে। ভালো বিক্রির জন্য চাঁদ রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।নুর শপিং কমপ্লেক্স নিচতলায় শোরুমের বিক্রয়কর্মী জুবায়ের বলেন, এবারে গতবারের মতো বেচাকেনা হচ্ছে না। তবে ২৩ বা ২৬ রোজার পরে বিক্রি আবারও বাড়তে পারে।