মনির হোসেন
বাঙালীর অন্যতম প্রধান উৎসব পহেলা বৈশাখের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। বাংলা নববর্ষের প্রথম প্রহরে এ ‘মঙ্গল শোভযাত্রা’র পথিকৃৎ যে যশোরের চারুপীঠ তা কারো অজানা নয়। এ শোভাযাত্রা এখন বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ‘সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসেবেও স্বীকৃত। প্রতিবছরের মতো এবারও যশোরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে নববর্ষ বরণের প্রস্তুতি চলছে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের প্রস্তুতি শুরু করেছে।
বিভিন্ন সংগঠনের বর্নাঢ্য সাংস্কৃতিক আয়োজনের চিন্তা থাকলেও বরাবরই চারুপীঠ ‘মঙ্গল শোভযাত্রা’র প্রতি সবেথেকে বেশি গুরুত্বারোপ করে। এবারো তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
শনিবার ( ২২ মার্চ) সকালে আনুষ্ঠানিক আয়োজনে চারুপীঠ যশোর মঙ্গশোভাযাত্রার উপকরণ প্রস্তুত করার কাজ উদ্বোধন করেছে।
চারপীঠ সভপতি হারুন অর রশীদের সভাপতিত্বে এবং সাধারন সম্পাদক মুমুনুর রশীদের সঞ্চালনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোর জেলার প্রধান সমন্বয়ক শিল্পী রাশেদ খান এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্ভাবক মাহবুব জামাল শামীম, মফিজুর রহমার রুন্নু, অধ্যক্ষ শাহিন ইকবাল, তরিকুল ইসলাম তারু,পরিতোষ বাউলসহ অন্যরা।
চারপীঠ সভাপতি হারুন অর রশীদ জানান, এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার থিম ‘এসো যতনে রাখি ভূবণ’। শোভাযাত্রাকে বর্ণিল ও আকর্ষণীয় করতে থিমের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণসব উপকরণ তৈরি হবে। প্রতিবছরের মতো এবারও তা সকলের হৃদয় জয় করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মঙ্গল শোভাযাত্রার জনক মাহবুব জামাল শামীম বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের জীবনকে শিল্পবিবর্জিত, গুণহীন, জড়তা, বন্দীদশা থেকে মুক্ত করে প্রাণখোলা-গুণী-রসিক-শিল্পীত জাতি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ নিয়ে ১৩৯২ বঙ্গাব্দে যশোর শহরে মঙ্গল শোভাযাত্রার রূপায়ণ ও প্রচলন করা হয়। এর সঙ্গে যুক্ত করা হয় সব সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিকে। এটি শিল্পের একটি সামাজিক আন্দোলন হিসেবে শুরু হয়। যাতে আবহমান বাংলার নৃত্য ও বাদ্যসহ দৃশ্যমান শিল্পের আঙ্গিক ও লোক ঐতিহ্যের মোটিভ খোজা শুরু হয়, শুরু হয় শেকড়ের সন্ধানে যাত্রা। বাঙালীর এ শিল্পের আঙ্গিক ও লোক ঐতিহ্যে সর্বদা সমান্নত ও অক্ষুন্ন থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।