আতাউর রহমান কাওছার, ওসমানী নগর প্রতিনিধি::
ওসমানীনগরে ডাকাত ডুকার সংবাদ মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে প্রবাসীর বাড়ি লুট করেছেন আওয়ামীলীগ নেতা, হত্যা ও ডাকাতি মামলার আসামী জুনাইদ, আকাইদ মিয়া ও খনকার মিয়া গং। তারা মিথ্যা সংবাদ প্রচর করে প্রবাসী বাড়ি লুট করে। এতে ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ৫ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান প্রবাসী আব্দুল হক ছানু মিয়া। তার প্রাণ নাশের হুমকীও দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
গতকাল মঙ্গলবার (৪মার্চ) ওসমানীনগর সাদিপুর ইউনিয়নের উত্তর কালনিরচর গ্রামের মৃত আব্দুল খালিকের ছেলে প্রবাসী আব্দুল হক ছানু মিয়া, ওসমানীনগর উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। এব্যাপারে ছানু মিয়া বাদী হয়ে গত সেমাবার ওসমানীনগর থানায় মামরা দায়ের করেন। মামলা নং ০২।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী ছানু মিয়া সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত দুই মাস ধরে তার পরিবারসহ এক ছেলে নিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের ওসমানীনগর উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের উত্তর কালনিরচর গ্রামে তার পৈর্তৃক বসত ভিটায় বাস করছেন। গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে কালনীরচর মসজিদে মাইকে ঘোষনা দেয়া হয় ডাকাত ডুকেছে এমন সংবাদ প্রচার করা হয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
এরপর রাত ১টার দিকে পুলিশ সদস্যরা আব্দুল হকের বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় আসলে জুনাইদ বাহিনীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তাদের উপর এলোপাতারি হামলা করে। এতে এসআই মুজিবুর রহমান সহ আরো ৩ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। এদিকে পূর্ব হতে একই গ্রামে আমার প্রতিবেশী বাড়ীর বাসিন্দা আওয়ামীলীগের নেতা বিভিন্ন হত্যা ডাকাতি মামলার আসামী ও আওয়ামী পদদারী সন্ত্রাসী মৃত হামিদ উল্লার ছেলে জুনাইদ ও মৃত রুকুম উল্লার ছেলে আকাইদ মিয়া ও খনকার মিয়া, মৃত ছানু মিয়ার ছেলে শিবরুল আমিন, আকাইদ মিয়ার ছেলে ইমন মিয়া ও রুমন মিয়া, আশিক মিয়ার ছেলে ফাহিম আহমদ ধন মিয়া, মৃত সাজিদ মিয়ার ছেলে মোবারক হোসেন মেন্দি মিয়াসহ তাদের ধলবল নিয়ে আব্দুল হক ছানু মিয়ার উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত কালনিরচর বাজারের মার্কেটসহ সম্পূর্ন সম্পত্তি ২০/২৫ বছর আওয়ামী সরকারের স্বৈরাচারীর ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীতায় জবর দখলে রয়েছে। উক্ত বিষয়ে এলাকার স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ একাধিক বার সালিশি বৈঠক করে বিরোধ মিমাংশায় ব্যর্থ হলে প্রবাসী এব্যাপারে বাদী হয়ে ২০২০ সালে মামলা দায়ের করেন।
মামলার রায় ছনুæ মিয়ার পক্ষে আসে। তিনি উচ্ছেদ মামলা করলে ম্যাজেস্ট্রেট সরেজমিনে এসে জায়গা দখল মুক্ত করে দেন। উক্ত জায়গায় ছানু মিয়া মার্কেটের কাজ করাবস্থায় উপরে বর্ণিত আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তার মার্কেটের কাজে বিভিন্ন ভাবে বাধ্যগ্রন্থ করছে। এমনকি তাকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকী দিচ্ছে এবং একই সাথে তার কাছে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবীও করছে। অন্যথায় তার মালিকানা জমিতে কাজ করতে দিবেনা এবং মারধর করবে বলে হুমকী দিচ্ছে।
প্রবাসী আব্দুল হক ছানু মিয়া চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তারা তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে গত মাসের ২৮ তারিখ তার এলাকায় ডাকাত ডুকছে বলে মসজিদে মাইকিং করে নাটক শুরু করে ছানু মিয়ার বাড়ীতে হামলা করে এবং বাড়ী ভাংচুর করে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন বরে মসজিদের ইমামকে জিজ্ঞাসা করতে গেলে অভিযুক্তরা পুলিশকে ও ডাকাত ডাকাত বলে পুলিশের উপর হামলা চালায়। কিন্তু এলাকায় কোন ঢাকাত আসার কোন সত্যতা পুলিশ খুজে পায় নাই। উক্ত বিষয়ে পুলিশ বাদী হয়ে অভিযুক্তদের উপর একটি মামলা দায়ের করেছে। ১ মার্চ রাতে ওসমানীনগর থানা থেকে ওদের ধরতে অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযান চালিয়ে আসামীদের বাড়ী থেকে বিপুল পরিমান দেশিয় অস্ত্র উদ্ধার করে। পুলিশ ফিরে আসার পর রাত অনুমানিক ১ টায় জানাইদ ও আকাইদ তাদের দলবল নিয়ে আবার তার বাড়ীতে পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালায়। এ সময় তার ঘর হতে নগদ ৫ লক্ষ টাকা, গলার চেইন হাতের বালা কানের দোল সহ ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লোট করে নিয়ে যায়। এমনকি রমজান মাসে অসহায় দরিদ্র মানুষের প্রায় ৩ লক্ষ টাকার ত্রান সামগ্রী মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা একই রাতে ছানু মিয়ার চাচা হাজী লোকমান আলীর গেইট ভেঙ্গে তাহার বাড়ীতে হামলা করে এবং আরেক চাচাতো ভাই খছরু মিয়া’ ও খালেদ মিয়ার বাড়ীতে হামলা করে আনুমানিক ৫ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী ছানু মিয়া আরো জানান, খুবই নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আমরা আছি। আমাদের জানমালের নিরাপত্তা না থাকায় আমরা এলাকায় যেতে ভয় পাচ্ছি। আওযামীগের সন্ত্রাসীরা হুমকী দিচ্ছে যে, এলাকায় গেলে আমাদের কে খুন করে ফেলবে। আমরা এই হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ডয়লেন, প্রবাসী আব্দুল হক ছানু মিয়ার স্ত্রী রেহেনা পারভীন, রুহেল আহমদ, খুজাইল মিয়া ও সুহেব মিয়া।