মাসুম পারভেজ, সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা):
রংপুর হাইওয়ে রিজিয়ন মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে রংপুর অঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনায় ১২৩ জন প্রাণ হারান এবং আহত হন ২৪৬ জন। এই সময়ে সাতটি হাইওয়ে থানায় ১১৬টি মামলা রুজু হয় এবং আইন লঙ্ঘনের দায়ে প্রায় সাড়ে সাত হাজার যানবাহনের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন দেওয়া হয়।
রংপুর হাইওয়ে পুলিশের পর্যালোচনায় দেখা যায়, দুর্ঘটনার পেছনে নানা কারণ থাকলেও জনসচেতনতার অভাব সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর। তাই ভবিষ্যতে আইন প্রয়োগ আরও কঠোর করার পাশাপাশি জনসচেতনতা তৈরিতে বহুমাত্রিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে।
মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম শুরু
এরই অংশ হিসেবে শনিবার সকালে হাইওয়ে পুলিশ রংপুর রিজিয়নের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম রংপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কের পাগলাপীর বাজার এলাকায় পথচারী, বাস ও ট্রাক চালক এবং যাত্রীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় একটি পথসভায় শ্রমিকদের সঙ্গে সড়ক নিরাপত্তা, ট্রাফিক আইন ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
শিশুদের টার্গেটে সচেতনতামূলক কর্মশালা
পরে হাতীবান্ধা হাইওয়ে থানা এলাকায় ঐতিহ্যবাহী বড়খাতা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি সচেতনতামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদুল বাড়ি, সমাজসেবক আব্দুর রহমান, শিক্ষকবৃন্দ ও থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সাঈদ উপস্থিত ছিলেন। প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থী এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে।
পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম মূল বক্তা হিসেবে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ, ট্রাফিক আইন, দুর্ঘটনার সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রভাব এবং শিক্ষার্থীদের করণীয় বিষয়ে প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন। তিনি বলেন:
“শুধু আইন প্রয়োগ যথেষ্ট নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সচেতন করে তুললে স্থায়ী পরিবর্তন সম্ভব। হাইওয়ে পুলিশের প্রতিটি থানা এলাকায় আমরা এই সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাব।”
উপসংহার
রংপুর হাইওয়ে পুলিশ মনে করে, আইন প্রয়োগ ও জনসচেতনতা—দুইয়ের সম্মিলিত প্রয়াসেই সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস সম্ভব। ভবিষ্যতে এসব কার্যক্রম আরও বিস্তৃত পরিসরে পরিচালনার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা।