(জয়পুরহাট) জেলা প্রতিনিধি:
কওমী, দেওবন্দী দাবিদার বগুড়া জামিল মাদ্রাসা থেকে বিতাড়িত তথাকথিত মুফতি শফী কাযেবী সোশ্যাল মিডিয়া, বিশেষ করে ফেসবুকে লেখালেখি, ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ‘বাহাস’-এর নামে ধারাবাহিক মিথ্যাচার-অপপ্রচার এবং গতকাল জয়পুরহাটে করা সম্মেলনে মিথ্যাচারের প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বেলা ১২টায় ক্ষেতলাল প্রেসক্লাব কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মুহাম্মাদ এমএম ডক্টর আশরাফ আলীমুল্লহ সিদ্দীকীর অনুসারীরা এই সংবাদ সম্মেলন করেন৷
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, মুহাম্মাদ আলহাজ্ব এমএম ডক্টর আশরাফ আলীমুল্লহ সিদ্দীকীর মুরিদ মুহাম্মাদ আমানুল্লাহ আমান।
তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, স্বঘোষিত বাহাসের প্রবক্তা শফী কাসেমী নির্লজ্জের মতো তার অনুসারীগং এর বাহবা পাবার আশায় মিথ্যাচার চালিয়েই যাচ্ছে। সম্প্রতি সে আবারও জয়পুরহাটে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে কিছু ভিত্তিহীন দাবি উপস্থাপন করেছে, যা কখনোই সত্য নয়। এমন তাহা মিথ্যাচার একমাত্র চরম মূর্খ ও জাহেল মুরাক্কাবের দ্বারাই সম্ভব। গতকাল ২৮ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলনে সে মিথ্যাচার করে দাবি করেছে, জয়পুরহাটে আমাদের প্রতিনিধি নাকি এসপি অফিসে গিয়ে বাহাসের প্রস্তাব দিয়েছিল এবং আমরা নাকি, এসপি মহোদয়ের দেওয়া তারিখে এসপি অফিসে গিয়ে বাহাসে অংশগ্রহণ করবো। এই রকম কোনো চুক্তিনামা বা ডিড অথবা এইরকম কোন কথা এসপি মহোদয় বা তাদের সাথে হয়নি। যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও ডাহা মিথ্যা কথা। তারা চাইলেও এইরকম ডকুমেন্টস দেখাতে পারবেনা।
প্রকৃত ঘটনা হলো, গত ৬ এপ্রিল জয়পুরহাট কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে আমাদের সম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা আশরাফ
আলীমুল্লাহ সিদ্দীকী উনার ওয়াজ মাহফিল ছিল। সে অনুযায়ী মাহফিল কমিটি প্রশাসনের নিকট থেকে মাহফিলের অনুমতি নেয়। কিন্তু কওমী, চরমোনাই এবং ইলিয়াসি তাবলীগী সন্ত্রাসীরা মাহফিল বন্ধের ষড়যন্ত্র করে হঠাৎ করে মাহফিলের ২ দিন আগে একইদিন একই
মাঠে তারাও মাহফিল করবে বলে মাহফিলের পোস্টার তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করতে থাকে এবং তারাই আবার প্রশাসনের কাছে গিয়ে এআই প্রযুক্তি দ্বারা এডিট করা কিছু কাটিং ওয়াজ শুনিয়ে মাহফিল বন্ধ করার জন্য কান্নাকাটি করে। প্রশাসনকে তারা বলে মাহফিল হলে নাকি, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হবে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হবে ইত্যাদি মিথ্যা ভয় দেখায়। পরে এসপি মহোদয় মাহফিল কর্তৃপক্ষকে মাহফিল না করার জন্য নির্দেশ করে। মাহফিল কর্তৃপক্ষ প্রশাসনকে সম্মান করে মাহফিল না করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে এসপি মহোদয় দুই পক্ষকে তার অফিসে বসে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার জন্য বলেন। যে বিষয়ে তখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। এর মধ্যে কথিত মুফতি দাবিদার মিথ্যাবাদী শফী কাসেমী লোক দেখানো বাহাসের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা মর্মে ফেসবুকে বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার শুরু করে। যদিও এসপি মহোদয় তার অফিস কক্ষে বাহাস নয় আলোচনার প্রস্তাব করেছিলেন।
আমরা তখন শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এসপি মহোদয়ের কাছে লিখিতভাবে বাহাসের শর্তনামাসহ ডিড জমা দিই। এসপি মহোদয়কে আমরা পরিষ্কারভাবে বলি বাহাস হবে খোলা ময়দানে, জনসম্মুখে, শর্তসাপেক্ষে। কোন আবদ্ধ ঘরে নয়।
আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, এইসব বাতিল ফেরকাদের সাথে বাহাসে বসার জন্য আমরা সবসময়ই প্রস্তুত। আমরা এসপি মহোদয়কে অনুরোধ করি,
আপনি বাহাসের ভিড়ে তাদের সাক্ষর নিয়ে সার্কিট হাউজ মাঠে বসার ব্যবস্থা করুন। প্রয়োজন হলে প্যান্ডেল খরচও আমরাই বহন করবো। কিন্তু, শফী কাযেবী ও তার প্রতিনিধিগণ কেউ বাহাসের ডিডে সাক্ষর করতে রাজি হয়নি। উল্টো তারা প্রশাসনকে ভয় দেখায় – প্রকাশ্যে
বাহাস হলে নাকি ঝামেলা হবে। কারণ, তারা জানে, জনসম্মুখে বসলে তাদের সকল মিথ্যাচার প্রকাশ হয়ে যাবে। জনসাধারণ তখন তাদের জুতা দিয়ে ‘মেহমানদারি করবে এবং তাদের ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ হয়ে যাবে। এজন্যই তারা আবদ্ধ ঘরে বাহাসে বসতে চায়। আর আবদ্ধ ঘরে বাহাস হলে তারা পরাজিত হয়েও বের হয়ে তাদের অন্ধ অনুসারীদের হাজার হাজার মুখে মিথ্যাচার করবে যে তারা বিজয়ী হয়েছে।
যা তারা পূর্বেও বহুবার করেছে। সংবাদ সম্মেলনে শফী কার্যেবীর ভিত্তিহীন দাবিসমূহ ও তার মিথ্যাচারের খন্ডন করা হয় এবং প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে শর্তনামার ডিডে স্বাক্ষর করে প্রকাশ্য ময়দানে, শর্তসাপেক্ষে বাহাসে বসার আহবান করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, শিবগঞ্জ বিহার জামে মসজিদের খতিব মুহাম্মাদ রাফিউল ইসলাম, গনমঙ্গল জামে মসজিদের খতিব মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম, কালাই নয়াপাড়া জামে মসজিদের খতিব মুহাম্মাদ রবিউল ইসলাম,
নিশ্চিন্তা জামে মসজিদের খতিব মুহাম্মাদ এনামুল হক্ব, ক্ষেতলাল ফকিরপাড়া জামে খতিব মোরশেদুল ইসলাম, কাথাইল গোপীনাথপুর জামে মসজিদ খতিব মুহাম্মাদ রিফাত ইসলাম, মইয়ুম জামে মসজিদের খতিব মুহাম্মাদ আবু তালহা, রসূলপুর দাহারপুকুর জামে মসজিদ খতিব মুহাম্মাদ রিয়াজুল ইসলাম, তারাকুল জামে মসজিদের খতিব মুহাম্মাদ মহসিন ইসলাম, খুঞ্জিয়াপাড়া জামে মসজিদ খতিব মুহাম্মাদ রবিউল ইসলাম, মিনিগাড়ী জামে মসজিদের খতিব মুহাম্মাদ নাজমিত সাদাতসহ অসংখ্য আলেম-ওলামা ও ইমাম- মোয়াজ্জেম উপস্থিত ছিলেন।