শাহাদাৎ বাবু, নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালী সদর উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নের রামানন্দী গ্রাম থেকে অপহৃত দুই স্কুলপড়ুয়া বোনের ২১ দিন পার হলেও এখনও তাদের উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঘটনায় দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়েছে পরিবার ও এলাকাবাসী।
গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন এসএসসি পরীক্ষার্থী তাহরিম হারুন ফালাহ (১৫) ও তার ছোট বোন তাছনুবা হারুন তাহা (১২)। পরিবারের অভিযোগ, পূর্ব বিরোধ ও উত্ত্যক্তের জের ধরে চর বাঞ্চারাম গ্রামের ওমর ফারুকের ছেলে সাজ্জাদুর রহমান শাওন ও তার সহযোগীরা এ অপহরণে জড়িত।
অপহরণের দিন কী ঘটেছিল?
মা ফরিদা আক্তার জানান,
“২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় আমি ঘরের বাইরে ছিলাম। সেই সুযোগে শাওন ও তার কয়েকজন সহযোগী ঘরে ঢুকে আমার দুই মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।”
তিনি আরও বলেন, শাওন দীর্ঘদিন ধরে তার মেয়েকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে উত্ত্যক্ত করছিল। বিষয়টি জানালেও শাওনের পরিবার ব্যবস্থা নেয়নি।
পরিবারের আর্তি:
ভিকটিমদের মামা ওয়াহিদুর রহমান অপু জানান,
“২১ দিনেও কোনো অগ্রগতি নেই। পুলিশের সঙ্গে একাধিকবার অভিযুক্তের পরিবারের বৈঠক হলেও সন্ধান মেলেনি। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার থানায় বৈঠকের পর পুলিশ শাওনকে গ্রেপ্তার করে।”
অন্যদিকে, বাবা হারুন অর রশিদ বলেন,
“আমার বড় মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার ছয়টি বিষয় দিয়ে ফেলেছে। পরদিনের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখনই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। জানি না ওরা কোথায় আছে, বেঁচে আছে কি না। আমরা শুধুই মেয়েদের ফিরিয়ে পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।”
পুলিশের বক্তব্য:
সুধারাম মডেল থানার এসআই ফখরুল ইসলাম বলেন,
“অভিযোগের ভিত্তিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। অভিযুক্ত শাওনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।”
শেষ কথা:
তথ্যপ্রযুক্তির যুগেও যদি ২১ দিন পরেও দুই স্কুলছাত্রীর কোনো খোঁজ না পাওয়া যায়, তবে এটি শুধু একটি পরিবারের নয়, গোটা সমাজের জন্যই বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ। ভুক্তভোগী পরিবার দ্রুত সন্তানদের নিরাপদে ফিরে পাওয়ার জন্য প্রশাসন ও সমাজের সহমর্মিতা ও কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করছে।