ফরিদপুর প্রতিনিধি,বিধান মন্ডল:
ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় যুবলীগ নেতার পক্ষে অবস্থান নেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের অন্তত ৩০টি বাড়িতে ভয়াবহ হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১০ মে) সকালে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাঙ্গারদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, সম্প্রতি আকিকার মাংস ভাগাভাগি নিয়ে উজ্জল মোল্যা ও তার ভাই ফারুক মোল্যার মধ্যে পারিবারিক বিরোধ দেখা দেয়। এরই জেরে রাজনৈতিক সমর্থন ভাগ হয়ে পড়ে—উজ্জল মোল্যা স্থানীয় যুবলীগ নেতা ফরহাদ মোল্যার অনুসারী এবং ফারুক মোল্যা জালাল মাতুব্বরের ঘনিষ্ঠ।
এই বিরোধকে কেন্দ্র করে সালথা সরকারি কলেজের বাংলা প্রভাষক ও স্থানীয় বিএনপি নেতা শাখাওয়াত হোসেন জয়নালের নেতৃত্বে পাশের যুদনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া, সোনাপুর ও রঙ্গরায়েরকান্দী গ্রাম থেকে সহস্রাধিক লোকজন ভাড়া করে এনে রাঙ্গারদিয়ায় হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ এই হামলাকারীরা রাঙ্গারদিয়া গ্রামের জালাল মাতুব্বরপন্থী অন্তত ৩০টি বাড়িতে তাণ্ডব চালায়, মালামাল লুট করে ও একাধিক স্থানে অগ্নিসংযোগ করে।
আব্দুল হাই নামের এক ভুক্তভোগীর একতলা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। খোকন মোল্যা, রোকন মোল্যা, মান্নান মোল্যা, রফিক, মাসুদ, নুরুল ইসলাম, লিয়াকত, ইলিয়াস, ইদ্রিস ও ওবায়দুর খার—এই সকল ব্যক্তির বসতঘর হামলার শিকার হয় বলে জানা গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত মান্নান মাতুব্বর বলেন, “আমি কোনো রাজনীতি করি না। ২০১৪ সালে বিএনপির নেত্রী শামা ওবায়েদ আমার বাড়িতে এসেছিলেন, সেই থেকে ফরহাদ ও তার লোকজন আমাদের বাড়িতে একাধিকবার হামলা চালিয়েছে। এবারও কোনো উসকানি ছাড়াই তারা শত শত লোক এনে হামলা চালিয়েছে।”
অন্যদিকে, হামলায় নিজের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে প্রভাষক শাখাওয়াত হোসেন জয়নাল বলেন, “হামলার ঘটনা ঘটেছে আমার পাশের গ্রামে। আমি এতে জড়িত নই। আমি বিএনপি করি ঠিক, তবে কোনো পদে নেই। তাই যুবলীগ নেতাকে সমর্থনের প্রশ্নই আসে না।”
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, “বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোক এসে রাঙ্গারদিয়ায় বসতবাড়িতে হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।”