সিলেট প্রতিনিধি:
সিলেট সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)-তে কম্পিউটার অপারেশন বিভাগের এক ইন্সট্রাক্টর মো. ওমর ফারুক গত ১৮ বছর ধরে একই কর্মস্থলে বহাল রয়েছেন। যদিও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, এক কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে দীর্ঘদিন একই স্থানে না রাখার নীতি রয়েছে, তবে তাঁর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতার ছত্রছায়ায় তিনি এতদিন এই পদে বহাল থাকার সুযোগ পেয়েছেন।
২০০৮ সালের ১৭ নভেম্বর থেকে ওমর ফারুক সিলেট টিটিসিতে কর্মরত রয়েছেন। ২০২২ সালে তাঁর বদলির আদেশ হলেও সেটি কার্যকর হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কিছু কর্মকর্তার সহায়তায় এবং মোটা অঙ্কের লেনদেনের মাধ্যমে তিনি তাঁর বর্তমান পদে বহাল থাকেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন একই জায়গায় কর্মরত থাকার কারণে ওমর ফারুক প্রতিষ্ঠানে একটি প্রভাবশালী চক্র গড়ে তুলেছেন। তিনি প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান অধ্যক্ষ শেখ মো. নাহিদ নিয়াজের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। দুজনের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানে একধরনের একচ্ছত্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনেক শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থী।
এছাড়া, কিছু অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি স্থানীয় জনগণের সঙ্গে অসদাচরণ করেন, আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে বিদ্রুপ করে থাকেন এবং দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষণার্থীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। যদিও এসব অভিযোগ এখনও প্রমাণিত হয়নি, তবে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
স্থানীয় কয়েকটি সূত্র আরও জানিয়েছে, ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে সিলেট টিটিসির পারিপার্শ্বিক এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি ভারতের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে পাথর ও অন্যান্য ব্যবসায় সম্পৃক্ত থাকার কথাও শোনা যাচ্ছে, যা তদন্তের দাবি রাখে।
বিশ্লেষণ:
দীর্ঘ সময় ধরে একই কর্মস্থলে থাকা একজন সরকারি কর্মকর্তার পেশাগত নিরপেক্ষতা ও নীতিনৈতিকতা প্রশ্নের মুখে পড়ে। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) নিয়মানুযায়ী বদলি না হওয়া এবং বদলি আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়া প্রশাসনিক দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়।
স্থানীয়দের দাবি:
স্থানীয় নাগরিকরা দ্রুত তদন্ত ও বদলির আদেশ কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন। তারা চান, সিলেট টিটিসিকে যেন ব্যক্তিগত প্রভাব ও রাজনীতিমুক্ত করে একটি দক্ষ ও দায়িত্বশীল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়।
প্রশাসনের বক্তব্য:
এ বিষয়ে সিলেট টিটিসি কিংবা বিএমইটির কোনো কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেননি। তবে অভিযোগগুলো গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।