শেরপুর প্রতিনিধি:
শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার সিংগাবড়ুনা ইউনিয়নের গোবিন্দ্রপুর গ্রামে কাবিখা (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকারি অর্থ বরাদ্দ থাকলেও কাজের সঠিক বাস্তবায়ন হয়নি, বরং নামমাত্র কিছু কাজ দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক জানান, গোবিন্দ্রপুর গ্রাম থেকে বড়ুইকুচি গ্রাম পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য ৩ লক্ষাধিক টাকার বাজেট বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু এই বরাদ্দের যথাযথ ব্যবহার হয়নি। তিনি বলেন, “কয়েক জায়গায় সামান্য মাটি ফেলে রাস্তার কাজ শেষ বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের সভাপতি ও সিংগাবড়ুনা ইউনিয়নের মহিলা ওয়ার্ড সদস্য জুনিয়া বেগম মূলত এই কাজ তদারকি করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রাজা মিয়া বলেন, এই রাস্তা দিয়ে গোবিন্দ্রপুর, বড়ুইকুচি ও আশপাশের গ্রামের শত শত মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন। কিন্তু সংস্কার কাজ না হওয়ায় রাস্তাটি এখন অনেক জায়গায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সামনে বর্ষা আসছে, তখন এই রাস্তা দিয়ে হেঁটেও যাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে, যানবাহন তো দূরের কথা।
সিংগাবড়ুনা ইউনিয়নের এক যুবক বলেন প্রকল্পের কোনো কাজই সামাজিক অডিটের আওতায় হয়নি, স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সঠিক তদারকি নেই। এতে প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সরকারি টাকা বরাদ্দ হয় জনগণের কল্যাণের জন্য, কিন্তু দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষ সেই সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুম সামনে রেখে রাস্তার এই দুরবস্থার কারণে শিক্ষার্থী, কৃষক, কর্মজীবী মানুষসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়বে।
গোবিন্দ্রপুর গ্রামের আমিনুল হক বলেন প্রকল্পের কাজের জন্য বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও তা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। কোথাও সাইনবোর্ড নেই, নেই শ্রমিকের কোনো উপস্থিতি, নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর কথা থাকলেও, বাস্তবে তেমন কিছুই হচ্ছে না। অল্প কিছু জায়গায় নামমাত্র মাটি ফেলে কাজের অভিনয় করে প্রকল্পের টাকা উত্তোলনের চেষ্টা চলছে।
একই গ্রামের লিটন বলেন দুর্নীতি ও অনিয়মের সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করা হোক এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। একই সঙ্গে প্রকল্পের কাজ যেন প্রকৃতভাবে বাস্তবায়িত হয় তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নজরদারি ও তদারকি চালানোর জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্পের সভাপতি জুনিয়া বেগম বলেন, “আমরা রাস্তা পুরোপুরি ঠিক করে দেবো, আবার মাটি ফেলে কাজ শেষ করব।
স্থানীয় ইউপি চেয়্যারম্যান বলেন সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের সুফল পেতে হলে স্থানীয় পর্যায়ে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা জরুরি। তাই কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকেও এসব প্রকল্পের যথাযথ তদারকি ও সামাজিক অংশগ্রহণের ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন।