হাবিব আহমেদ, রাজশাহী:
কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে জমে উঠছে রাজশাহীর কোরবানির পশুর হাট। বিশেষ করে দেশি গরুর আধিক্যে রীতিমতো প্রাণ ফিরে পেয়েছে হাটগুলো। তবে হাটে ক্রেতা উপস্থিতি আশানুরূপ না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বিক্রেতারা।
রাজশাহীর বিখ্যাত সিটি হাটে প্রতিদিনই চলছে পশু কেনাবেচা। কাকডাকা ভোর থেকে রাত পর্যন্ত সারা দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার খামারিরা ও ব্যবসায়ীরা গরু, মহিষ নিয়ে আসছেন এই হাটে। সাধারণত সপ্তাহে দুই দিন হাট বসলেও কোরবানিকে সামনে রেখে এখন প্রতিদিন চলছে কেনাবেচা।
মাঝারি গরুতে বেশি আগ্রহ
সিটি হাটে সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে মাঝারি আকারের দেশি গরু, যার দাম এক লাখ থেকে এক লাখ বিশ হাজার টাকার মধ্যে। ছোট গরুর দাম ৬৫ হাজার থেকে এক লাখ এবং একটু বড় গরুর দাম দুই লাখ থেকে দুই লাখ বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠছে। তবে পাঁচ লাখের বেশি দামের গরু এবার খুবই কম।
মহিষের দামও তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম। মাঝারি সাইজের মহিষ বিক্রি হচ্ছে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকায়।
প্রচুর পশু, কম ক্রেতা
রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর জানিয়েছে, এই জেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে প্রায় ৫ লাখ গবাদিপশু, যা চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। তবে হাটে দেখা যাচ্ছে, ভিড় তুলনামূলকভাবে কম। এতে অনেক খামারি ও ব্যবসায়ী লোকসানের আশঙ্কা করছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা ব্যবসায়ী জিয়ারুল বলেন, “সকাল থেকে তিনটা বাজে, একটা গরুও বিক্রি হয়নি। সামনে আরও কয়েকদিন সময় আছে, আশাবাদী কিছু হবে।”
চারঘাটের ব্যবসায়ী মোসাব্বের হোসেন জানান, “ভারত থেকে গরু না আসলেও এবার স্থানীয় খামারেই প্রচুর গরু রয়েছে। তবে ক্রেতা একেবারেই কম, দামও ভালো না। ফলে খামারিরা চিন্তায় আছে।”
ব্যবস্থাপনায় নজরদারি ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা
সিটি হাটের ইজারাদার খাইরুল ইসলাম জানিয়েছেন, হাটে নিরাপত্তায় বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন এবং স্বেচ্ছাসেবী টিম। পুলিশও রয়েছে টহলে।
পবা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন, “রাজশাহীর কোরবানির হাটে পশু স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ২১৩টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করছে। এখনও পর্যন্ত কোনো পশু ফেরত পাঠানোর প্রয়োজন হয়নি।”
ভবিষ্যৎ আশাবাদ
ঈদের আর মাত্র ক’দিন বাকি। বিক্রেতারা আশা করছেন, শেষ মুহূর্তে ক্রেতার চাপ বাড়বে। তবে সুষ্ঠু বেচাকেনা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের আরও নজরদারি প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন তারা।