হুমায়ুন কবির মিরাজ, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি:
ভালো কাজের আশায় দালালের খপ্পরে পড়ে অবৈধভাবে ভারতে পাড়ি জমিয়েছিল তারা। ভাগ্য বদলানোর স্বপ্ন নিয়ে সীমান্ত পেরোলেও শেষ পর্যন্ত ঠাঁই হয়েছিল কারাগারে। মানবপাচারের শিকার হয়ে আটক হওয়া দুই শিশুসহ ৩৬ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরেছে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) সন্ধ্যায় ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে তাদের বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পরে তাদের বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়।
ফিরে আসা এসব কিশোর-কিশোরীদের বাড়ি দেশের বিভিন্ন জেলায়—যশোর, রাজশাহী, খুলনা, নোয়াখালী, কুড়িগ্রাম, নাটোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, কক্সবাজার, ঢাকা, নেত্রকোনা, রংপুর, মাদারীপুর, নরসিংদী, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রামে।
উদ্ধারপ্রাপ্তদের গ্রহণ করে তাদের প্রাথমিক সুরক্ষা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করছে জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, রাইটস যশোর, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি ও শিশু সুরক্ষা সংস্থা।
জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ারের যশোর শাখার সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার আব্দুল মুহিত জানান, দালালদের মাধ্যমে এই কিশোর-কিশোরীরা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতে গিয়েছিল। সেখানে বাসাবাড়িতে কাজ করার সময় ভারতীয় পুলিশ তাদের আটক করে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে কারাগারে পাঠায়। পরে ভারতীয় মানবাধিকার সংস্থার সহায়তায় ও দুই দেশের সরকারের উদ্যোগে তারা মুক্তি পায় এবং দেশে ফেরে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের উপ-পরিদর্শক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ফিরে আসা ৩৬ জনকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করে বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এরপর এনজিও সংস্থাগুলো তাদের হেফাজতে নিয়ে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করবে।’
মানবপাচার প্রতিরোধে সীমান্ত এলাকায় সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দালাল চক্রকে চিহ্নিত করে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।