নেত্রকোণা প্রতিনিধি
নেত্রকোণার খালিয়াজুরী উপজেলায় মাছ শিকারীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন এবং শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৫০ জনকে আটক করেছে।
শনিবার (৮ মার্চ) সকালে উপজেলার রসূলপুর ফেরিঘাট এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে নেত্রকোণার খালিয়াজুরী ও মদন উপজেলার ইজারাকৃত জলমহালগুলোতে মাছ লুটের ঘটনা ঘটছে। প্রতিদিন হাজারো মানুষ বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে বিলে প্রবেশ করে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত যেসব বিলে মাছ লুট হয়েছে, সেগুলোর ইজারা মূল্য প্রায় চার কোটি টাকা।
শনিবার সকালে কাঠালজান ও মরাগাঙ্গ জলমহালের মাছ ধরতে মাছ শিকারীরা ধনু নদীর পাড়ে জড়ো হন। তারা ফেরিঘাট পার হওয়ার জন্য গাড়ি রেখে নদী পারাপারের চেষ্টা করছিলেন। এ সময় ফেরিঘাটের স্থানীয়দের সঙ্গে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয় এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়। সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশত লোক আহত হন।
পরে বিক্ষুব্ধ স্থানীয়রা মাছ শিকারীদের শতাধিক পিকআপ ভ্যান, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নয়ন ঘোষ জানান, সংঘর্ষে আহত অন্তত ১৫-২০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। আরও অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
খালিয়াজুরী থানার ডিউটি অফিসার এসআই তোফাজ্জল হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত ৫০ জনকে আটক করা হয়েছে।
খালিয়াজুরী থানার ওসি মো. মকবুল হোসেন জানান, “পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে আছে। সংঘর্ষ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তদন্ত চলছে। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।”পরিস্থিতি এখন শান্ত, তদন্ত চলছে।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি ও তদন্তের জন্য পুলিশ কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।