সত্যজিৎ দাস, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবিতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অনুষ্ঠিত হয়েছে এক গণজাগরণমূলক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ। রোববার (১৮ মে) দুপুরে শ্রীমঙ্গল চৌমুহনা চত্বরে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
সকাল সাড়ে ১১টায় শহরের সোনার বাংলা রোড থেকে একটি মাদকবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে স্টেশন রোড প্রদক্ষিণ করে চৌমুহনা চত্বরে এসে সমাবেশে রূপ নেয়। ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচিতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, শ্রীমঙ্গলের শাপলাবাগ রেল কলোনি, সোনার বাংলা রোড, আরামবাগ ও দক্ষিণ ভাড়াউড়া এলাকাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে দীর্ঘদিন ধরে মাদক বেচাকেনা ও পতিতাবৃত্তি প্রকাশ্যে চলছে। তারা বলেন, স্থানীয়দের সহযোগিতায় কিছু অভিযান পরিচালিত হলেও প্রকৃত গডফাদাররা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
বক্তারা আরও বলেন, পুলিশে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও অনেক সময় তারা অনাগ্রহ দেখায় কিংবা অভিযানে দেরি করে। এমনকি হাতেনাতে আটক অপরাধীরাও অল্প সময়ের মধ্যে জামিনে বের হয়ে প্রতিবাদকারীদের হুমকি দিচ্ছে।
সমাবেশ থেকে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়, চিহ্নিত মাদক কারবারি ও পতিতাবৃত্তির আস্তানাগুলো দ্রুত উচ্ছেদ করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কার্যকর ও দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিক্ষানুরাগী মো. শাহিন আহমেদ। বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলাম শ্রীমঙ্গলের নেতা মাওলানা এম এ এ রহিম নোমানী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মো. মোজাহিদুল ইসলাম, ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশের জেলা সভাপতি মো. নাদির হোসেন, শ্রমিক নেতা মনির হোসেনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
সভাপতির বক্তব্যে মো. শাহিন আহমেদ বলেন, “মাদক শুধু ব্যক্তি নয়, গোটা সমাজকে ধ্বংস করে। শ্রীমঙ্গলের যুবসমাজ আজ ভয়াবহ হুমকির মুখে রয়েছে। এখনই কঠোর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে।”
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “মাদক ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড দমনে পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন নারী মাদক কারবারিসহ বহু আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
মানববন্ধন ও প্রতিবাদে অংশ নেন ব্যবসায়ী, শিক্ষক, আলেম, ক্রীড়াবিদ, শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শত শত মানুষ।