মীর ইমরান -মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুর শহরের শকুনী লেক এলকার এক নারীকে নেশাদ্রব্য খাইয়ে ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে । অভিযুক্ত রাহাত ওরফে শুভ (৩০) সদর উপজেলার ঘটমাঝি গ্রামের মতিউর রহমমান সেলিম ওরফে সেকান্দার শেখের ছেলে বিরুদ্ধে । এ ঘটনায় মাদারীপুর সদর মডেল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ঐ নারী। সঠিক তদন্ত করে এ ঘটনার সঠিক বিচার চেয়ে ,শনিবার (২২ ফ্রেব্র) দুপুরে নতুন শহর এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগী ঐ নারী।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগকারী নারী বলেন, মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি গ্রামের মতিউর রহমমান সেলিম ওরফে সেকান্দার শেখের ছেলে শুভ তার আত্মীয় হয়। আত্মীয়তার সম্পর্কের সুবাদে রাহাত ওরফে শুভ (৩০) মাঝেমধ্যে তার পিত্রালয়ে আসিত । শুভ একজন প্রাইভেট কার চালক হওয়ায়, পারিবারিক প্রয়োজনে তার গাড়ি ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাওয়া হত।
পারিবারিক খুটিনাটি বিষয় নিয়ে ঐ স্বামীর-স্ত্রীর সাথে তার মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে যোগযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সে সুযোগে শুভ ঐ নারীর স্বামীর সাথে তাকে মিলিয়ে দেয়ার কথা বলে ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় প্রাইভেটকার যোগে তার স্বামীর কর্মস্থল রাজবাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে বাসা থেকে নিয়ে যায়। পরে শহরের পাকদী এলাকায় নিয়ে তার গাড়ির মালিকের বাসায় একটু কাজ আছে বলে গাড়ি থামায়। তখন ঐনারীর মুখমন্ডলে একটি নেশা জাতীয় দ্রব্য মেশানো রুমাল দিয়ে চেপে ধরে। পরেঐ নারী অচেতন হইয়া পড়িলে শুভ ঐ নারীকে মাদারীপুর শহরের পাকদী এলাকার কাইয়ুম মিয়ার ভাড়া বাসায় নিয়া যায়। সে সময় রাহাত ওরফে শুভ ঐ নারীকে ধর্ষণ করে এবং স্মার্টফোনে ধর্ষণের সম্পূর্ণ ভিডিও ধারন করে এবং কিছু অশ্লীল ছবি তুলে রাখে। রাত ১০ টার দিকে ঐ নারীর জ্ঞান ফিরিলেঐ বাসায় কেন আনা হয়েছে জানতে চায় ঐ নারী। পরে অভিযুক্ত শুভ কিছু অশ্লীল ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে বলে কাউকে এ ঘটনা বললে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক, ইউটিউবে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয় ।
ভয়ে ঐ নারী কিছু বলতে পারেনি। পরে তাকে তার বাসায় দিয়া আসে শুভ। শুভকে অনেক অনুনয় বিনয় করে তার মোবাইল ফোন হইতে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও কাটার অনুরোধ করা হয়। অভিযুক্ত শুভ ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মাদারীপুর শহরসহ ঢাকাতে স্বামী স্ত্রীর পরিচয় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে ঐ নারীকে ধর্ষণ করে শুভ। এছাড় বিভিন্ন সময় ঐ নারীর নিকট থেকে নগদ মোট ৩,৩০,০০০/- (তিন লক্ষ ত্রিশ হাজার) টাকা হাতিয়ে নেয়। তাছাড়া ব্রাক,আশা ও সিএসএস এনজিও থেকে ঐ নারীকে স্ত্রী সাজিয়ে মোট ২ লক্ষ টাকা লোন তুলে নেয়। যার কিস্তি ঐ নারীকেই পরিশোধ করতে হয়। বিষয়টি শুভর পরিবারকে জানালে তারা কোন কর্ণপাত করেনি।
সর্বশেষ চলতি বছরের ০৮ জানুয়ারী বিকেলে ঘটমাঝি গ্রামে অভিযুক্তের বসত বাড়িতে যাওয়ার জন্য বলে।ঐ নারী সেখানে যেতে না চাইলে অভিযুক্ত শুভ ঐ নারীর হোয়াটসঅ্যাপ এ অশ্লীল ছবি সেন্ট করে এবং বলে তার কথামত সেখানে না গেলে অশ্লিল ছবি ও ভিডিও ফেইসবুক ও ইউটিউবে ছড়াইয়া দেবে। বাধ্য হয়ে সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী নারী অভিযুক্তের বাড়িতে গেলে অভিযুক্ত তার মামার নির্মাণাধীন ফাঁকা বিল্ডিং এর ভিতরে কৌশলে নিয়া যায়। সেখানে নিয়ে ভিডিও চিরতরে ডিলিট করার ওয়াদা করে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। ভিডিও ডিলিট করতে বললে লোকজন জড় করে তার মান সম্মান নষ্ট করার ভয় দেখায় । এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ঐ নারী মাদারীপুর সদর মডেল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগী ঐ নারী।