সাইফুল ইসলাম, বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ধুলিয়া ইউনিয়নে ভিজিএফের চাল বিতরণকালে জেলেদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে আল আমিন (৩৫) নামের এক জেলেকে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে ধুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে শনিবার সকাল ৯টা থেকে ১ হাজার নিবন্ধিত জেলের মাঝে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের জন্য বরাদ্দকৃত ৮০ কেজি (প্রতি মাসে ৪০ কেজি) চাল বিতরণ শুরু হয়। দুপুর ২টার দিকে জেলে আল আমিনসহ কয়েকজন চাল আনতে গেলে তাদের প্রত্যেককে ৫০ কেজির একটি বস্তা দেওয়া হয়। কিন্তু তারা দাবি করেন, বরাদ্দ অনুযায়ী তাদের ৮০ কেজি চাল পাওয়ার কথা। এ নিয়ে হট্টগোল শুরু হলে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব নাঈম সিকদার তারেকের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন জেলেদের ওপর হামলা চালান বলে অভিযোগ ওঠে। এ সময় হামলাকারীরা কিল-ঘুষি মেরে কয়েকজনকে রক্তাক্ত জখম করারও অভিযোগ ওঠে। এ সময় আতঙ্কে জেলেরা চাল ফেলে রেখে পালিয়ে যান।
আহত জেলে আল-আমিন অভিযোগ করেন, চাল বিতরণের খরচের নামে ইউনিয়নের প্রতিটি নিবন্ধিত জেলের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের মেম্বারদের মাধ্যমে এ টাকা সংগ্রহ করা হয় এবং প্যানেল চেয়ারম্যান জহির উদ্দিনের নির্দেশেই এটি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন বলেন, পরিষদের সামনে হয়তো ব্যক্তিগত কোনো কারণে মারামারি হয়েছে, তবে চাল বিতরণ নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। বরাদ্দকৃত চাল যথাযথভাবে বিতরণ করা হয়েছে। জেলেদের কাছ থেকে ২০০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটি পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব নাঈম সিকদার তারেক বলেন, এইসব কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমার নেতৃত্বে এরকম কিছুই ঘটেনি। জেলেরা নিজেরা মারামারি করেছেন। এক জেলে আরেক জেলেকে মারছেন। তারপর ওই জেলের ছেলেপেলে আইসা আবার অপর জেলেকে মারছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহাবুব আলম তালুকদার বলেন, আমি চাল বিতরণ শুরুর পর কিছুক্ষণ সেখানে উপস্থত ছিলাম। তখন কোনো অনিয়ম চোখে পড়েনি। তবে এ বিষয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান জহির সরদার ভালো বলতে পারবেন।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, এরকম কোনো অভিযোগ পাইনি। ধুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা থেকে হাসান গাজী নামে এক যুবলীগ নেতাকে ধরে নিয়ে আসছি। তখন তো কোনো সমস্যার কথা শুনলাম না। ঘটনা আমার জানা নাই।