নিজস্ব প্রতিবেদক :
মেহেরপুরে ধর্ষণ মামলার তদন্ত অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নিতে বাদীপক্ষকে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় আসামিদের গ্রেপ্তার ও তদন্ত অফিসারের শাস্তির দাবিতে মেহেরপুর সদর থানা ঘেরাও করেছেন স্থানীয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাতে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী কয়েকশ ছাত্র-জনতা সদর থানা ঘেরাও করে রাখেন। পরে অভিযুক্ত এসআই সুজয় কুমারকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।
জানা যায়, গত বছর ৯ সেপ্টেম্বর শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মেহেরপুর সদর থানায় মামলা করেন তার মা। মামলার প্রধান আসামি সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা বায়েজিদ হোসেন।
পুলিশ ১২ সেপ্টেম্বর বায়েজিদসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। পরে তারা জামিনে মুক্তি পান।
মামলার বাদী ভুক্তভোগী শিশুটির মা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পুলিশের অবহেলায় তিন আসামি জামিন পেয়েছেন। এর পর থেকে তারা আমাদের নানা কায়দায় হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন।
ধর্ষণের ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আমাকে মামলা প্রত্যাহার করে নিতে চাপ দিচ্ছে। বিষয়টি মীমাংসার জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুজয় কুমার উভয়পক্ষকে নিয়ে থানায় বসেন।
এ সময় এসআই সুজয় কুমার আসামিদের পক্ষ থেকে মামলা প্রত্যাহার করতে চাপ দিতে থাকেন।’
পরে ওই খবর পেয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতা তুষার আহমেদ ও সিয়াম হোসেন থানায় যান। তারা ধর্ষণ মামলার মীমাংসা করার প্রতিবাদ জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই সুজয় কুমার থানার মধ্যেই ওই দুজনকে লাঠিপেটা করেন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন থানা ঘেরাও করে প্রতিবাদ করেন। তারা এসআই সুজয় কুমার ও আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু হলে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ সময় ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ সুপার মাকছুদা খানম এবং আন্দোলনকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত এসআই সুজয় কুমারকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেন।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দীন, এসআই সুজয় কুমারকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। থানায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি আপাতত শান্ত রয়েছে।