জেলা প্রতিনিধি,কুমিল্লা
কুমিল্লা নগরবাসীর আতংকের নাম হয়ে দাড়িয়েছে স্যার গ্রুপ গুম,ছিনতাই, চাঁদাবাজী, আপহরন,চুরি,মিথ্যা মামলায় মানুষকে ফাঁসানোসহ সবধরনের আপরাধের মূল হোতা এই স্যার গ্রুপের সদস্যরা ।
সরেজমিনে পুরাতন চৌধুরীপাড়া, ডেলোনী বাড়ী কলোনী ও ইসলামপুর এলাকার স্থানীয় লোকজন স্যার গ্রুপের অপকর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দেন।
পুরাতন চৌধুরী পাড়া এলাকার বাসিন্দা কুমিল্লা জজ কোর্ট আইনজীবী বাহাউদ্দিন বলেন, এই স্যার গ্রুপের গ্যাংরা খুব ভয়ানক। তাদের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। ওই গ্রুপের সদস্যরা কখনো দুটি মটরসাইকেলে করে চার জন আবার কখনো তিনটি মটর সাইকেলে করে ছয় জন একসাথে মহড়া দেয়। তাদের সবার মাথা হেলমেট দিয়ে মুখ ঢেকে রাখে ছিনতাই করতে গেলে তাদেরকে যেন মানুষ চিনতে না পারে। এ স্যার গ্রুপের সদস্যরা আমার একটি আই ফোন ১৫ এবং নগদ ২৮ হাজার টাকা নিয়ে যায়। স্যার গ্রুপের সদস্যরা যে মোটর সাইকেল গুলো ব্যবহার করে এগুলোতে নাম্বার প্লেট থাকে না।
ওই এলাকার স্থানীয় চা দোকানদার রুহুল আমিন বলেন,স্যার গ্রুপের গ্যাংরা প্রতি মাসে চাঁদা নিয়ে যায়। এদের মোটরসাইকেল দিয়ে মহড়ার কারণে এলাকাবাসী সবসময় ভয় ও আতংকে থাকে। এই গ্রুপটি এলাকায় বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল চুরি করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার একজন স্কুল শিক্ষিকা বলেন -,এই স্যার গ্রুপের চক্রটি পুরাতন চৌধুরী পাড়া, ডেলুনি বাড়ী কলোনী, ইসলামপুর এবং আদালতের আশে পাশের এলাকায় সব রকমের অপরাধ করে থাকে। এরা স্থানীয় নয় এই এলাকায় কয়েকদিন পর পর বাসা পাল্টায়। অপরাধীরাা প্রতিনিয়ত আমাদের এলাকায় চাঁদাবাজি,ছিনতাই,চুরি ইভটিজিংসহ যাবতীয় অপকর্মে করে থাকে। কিছুদিন আগে আমার বাসা থেকে দুটি এনড্রয়েড মোবাইল নিয়ে যায়।
কুমিল্লার কান্দিরপাড় এলাকার একজন ব্যবসায়ী আরিফ চৌধুরী বলেন, স্যার গ্রুপ এলাকার ভেতরে বিভিন্ন অপরাধ ও অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে এলাকাটির পরিবেশ নষ্ট করে ফেলেছে।
এলাকায় মাদক বাণিজ্য থেকে শুরু করে নিয়মিত মাদক সেবন করে রাতের বেলায়। তিনি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এ বিষয়ে থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য
স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি মওদুদ আবদুল্লাহ শুভ্র বলেন,স্যার গ্রুপের সদস্যরা আমার থেকে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা দিতে অপরগতা প্রকাশ করলে আমাকে এলোপাতাড়ি ছুড়ি দিয়ে আঘাত করে। আমি কুমিল্লা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করি। তারা প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘুড়ে। আমি কোতওয়ালি মডেল থানায় ঘুম,হত্যার হুমকি ও আঘাত করার কারনে মামলা করি এবং চুরি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির জন্য দ্রুত বিচার আইনে মামলা করি। তারা একজন আরেকজন সদস্যকে স্যার বলে সম্বোধন করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ভুক্তভোগী জানন, আমাকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে ৪ লাখ টাকা নেয় স্যার গ্রুপ। পরে তারা আমার টাকা মেরে দেয় বিদেশ না পাঠিয়ে। আমি টাকা চাইলে জানে মেরে ফেলার হুমকও দেয়। আমি থানায় জিডি করেছি। তাদের ভয়ে আমি এলাকায় থাকি না।
জেলা গোয়েন্দা অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুল্লাহ বলেন, আপনার মাধ্যমে আমরা চৌধুরীপাড়ার স্যার গ্রুপ সম্পর্কে জানতে পারলাম। আমরা ওই এলাকাটিকে গোয়েন্দা নজরদারিতে আনব। আমাদের ডিবির টিম এ স্যার গ্রুপে কারা আছে তাদেরকে খুঁজে বের করবে। স্থানীয় ভাবে আমরা ওই এলাকায় বিশেষ ভাবে কাজ করব।
কুমিল্লা কোতওয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মাহিনুল ইসলাম জানান, স্যার গ্রুপের বিষয়টি আমরা শুনেছি ওই এলাকায় আমরা বেশ কয়েকবার পুলিশের ফোর্স পাঠিয়েছি। তাদের দ্রুত মোভমেন্ট করার কারণে আমাদের সনাক্ত করতে একটু দেড়ি হচ্ছে । আমরা পুরাতন চৌধুরী পাড়া এলাকায় পুলিশের কার্ষক্রম আরো বৃদ্ধি করে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করছি ।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নজির আহমেদ খাঁন বলেন, স্যার গ্রুপের কর্মকান্ড গুলো আপনার কাছ থেকে জানলাম। কোতওয়ালি মডেল থানার ওসির সাথে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলব।
সাকলাইন যোবায়ের কুমিল্লা