বিধান মন্ডল (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:
গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া ফরিদপুরের সালথার মেধাবী শিক্ষার্থী সুব্রত কুমার কুন্ডুর দায়িত্ব নিয়েছে সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রভাতের হাসি। সংগঠনটির সহযোগিতায় পাশে দাঁড়িয়েছেন এই সংগঠনের উপদেষ্টা ওয়ান গ্রুপের পরিচালক ও বিজিএম-এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোমান মিয়া।
প্রভাতের হাসি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ পিনু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই বল্লভদী ইউনিয়নের বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। সুব্রতের অসাধারণ সাফল্য এবং তার পরিবারের আর্থিক সংকট আমাদের হৃদয় স্পর্শ করেছে। তাই ভর্তি থেকে শুরু করে বই-খাতা, লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ আমরা বহন করবো ইনশাআল্লাহ। এই কাজে রোমান মিয়া সার্বিক সহযোগিতা করবেন।
গত (১১ জুন) বিকালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সুব্রতকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলে। এর পরেই এগিয়ে আসে সংগঠনটি।
দারিদ্র্য জয় করে জিপিএ-৫ পাওয়া সুব্রত কুমার কুন্ডু ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের বিষ্ণুদি গ্রামের বাসিন্দা। বাবা সুধির কুন্ডু একজন ক্ষুদ্র মুদি দোকানদার এবং মা গৃহিণী। তিন ভাইবোনের মধ্যে সুব্রত দ্বিতীয়। দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত হলেও পড়ালেখার প্রতি ভালোবাসা তাকে এগিয়ে রেখেছে সবার সামনে।
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় তিনি বল্লভদী ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে অংশ নেন। স্কুলটির পাশের হার যেখানে মাত্র ৩৩.৩৩ শতাংশ, সেখানে সুব্রত জিপিএ-৫ পেয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন।
পরীক্ষার ঠিক আগে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুর্বল হয়ে পড়লেও মায়ের ভালোবাসা ও বাবার সাহস যুগিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। প্রতিটি পরীক্ষায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করে অর্জন করেন কৃতিত্ব।
সুব্রতের মা-বাবার একটাই আকুতি, যদি কেউ এই মেধাবী ছেলেটার পাশে দাঁড়াতেন, তাহলে সে হয়তো দেশের জন্য কিছু করতে পারতো।
সুব্রতের পাশে দাঁড়িয়ে সেই আকুতির জবাব দিয়েছে প্রভাতের হাসি ও ওয়ান গ্রুপ। এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে সমাজের অন্যান্য বিত্তবান ও প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ।