বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন প্রশ্নে দলটির ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে। তিনি বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচন চান না।”
মির্জা আব্বাস বলেন, “নির্বাচন যদি ডিসেম্বরের মধ্যে না হয়, তাহলে বাংলাদেশের জনগণ সেই নির্বাচন আদায় করে নেবে। অন্যথায় দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা বজায় থাকবে না। আমাদের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তারা জানে নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতার বৈধতা হয় না।”
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শেরে-বাংলা নগর জিয়া উদ্যানে তাঁর সমাধিতে তিনি মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা আব্বাস ড. ইউনূসকে নিয়ে বলেন, ‘খুব দুঃখের সঙ্গে একটি কথা বলি, দেখলাম ইউনূস সাহেব জাপানে বসে বিএনপি সম্পর্কে বদনাম করছেন। একটু লজ্জাও লাগল না। দেশের সম্পর্কে বিদেশে বসে বদনাম করতে। তিনি বললেন, একটি দল নির্বাচন চায়। আমরা বলতে চাই, একটি লোক নির্বাচন চায় না, সে হলেন ড. ইউনূস। উনি নির্বাচন চায় না।’
বিএনপি শুরু থেকেই ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চেয়েছে, আর এই ডিসেম্বরের সময়সীমার প্রস্তাব প্রথম দিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই। কিন্তু পরে তিনিই সেই নির্বাচন পিছিয়ে জুন মাসে নিয়ে যান।
তিনি বলেন, “যদি জুন মাসে নির্বাচনের কথা বলা হয়, তাহলে সেই নির্বাচন এ দেশে কখনোই অনুষ্ঠিত হবে না। নির্বাচন যদি করতেই হয়, তাহলে সেটা ডিসেম্বরেই করতে হবে। আর যদি তা না হয়, তার দায় দায়িত্ব সরকারের, আমাদের নয়। বাংলাদেশের জনগণই তাদের ভোটাধিকার আদায় করবে, নইলে দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা আর টিকবে না।”
জিয়াউর রহমানের সংস্কারমূলক কাজের কথা তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, “জিয়াউর রহমান কখনোই সংস্কারের জন্য বিদেশ থেকে কাউকে আমদানি করেননি। কিন্তু বর্তমান সরকার দেশি সংস্কার নয়, বরং বিদেশিদের দিয়ে দেশ চালানোর সংস্কার করছে। সংস্কার সংস্কার করতে করতে তারা এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে, যেখানে আর নির্বাচন দিতে চায় না।”
উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার টোকিওতে অনুষ্ঠিত ৩০তম নিক্কেই ফোরামে দেওয়া ভাষণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “কিছু রাজনীতিবিদ ডিসেম্বরে নির্বাচন চাচ্ছেন। তবে আমরা চাই না দেশটিকে পুরোনো অবস্থায় রেখে দিই। সত্যিকারের সংস্কার করে ভালো কিছু করতে চাইলে আমাদের ছয় মাস সময় লাগবে।” তিনি আরও বলেন, “অনেকে নির্বাচন করে ফেলতে বলছেন, কিন্তু একটি নির্দিষ্ট দল ছাড়া কেউ তা আগ্রাসীভাবে বলছে না।”