প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি নারী শান্তিরক্ষী নিয়োগের জন্য জাতিসংঘকে সক্রিয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ২০ এপ্রিল রবিবার জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যাঁ-পিয়ের লাক্রোয়ার সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই আহ্বান জানান।
বৈঠকে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ শান্তিরক্ষা মিশনে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমি চাই, আরও বেশি বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষী হিসেবে যুক্ত হোক।”
বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম, যেখানে প্রায় ৫,৬৭৭ জন শান্তিরক্ষী বিশ্বের ১১টি সক্রিয় মিশনের মধ্যে ১০টিতে নিযুক্ত আছেন।
জ্যাঁ-পিয়ের লাক্রোয়া জানান, জাতিসংঘ চায় নারী শান্তিরক্ষীদের কোনো নির্দিষ্ট ভূমিকায় সীমাবদ্ধ না রেখে সকল পর্যায়ে যুক্ত করতে। তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীদের সম্পৃক্ততায় বাংলাদেশকে সবরকম সহায়তা দেবে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, বাংলাদেশ প্রয়োজনে অতিরিক্ত সেনা ও পুলিশ শান্তিরক্ষী হিসেবে পাঠাতে প্রস্তুত। তিনি জাতিসংঘের পিসকিপিং ক্যাপাবিলিটি রেডিনেস সিস্টেমে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুত পাঁচটি ইউনিটের কথা তুলে ধরেন এবং সদর দপ্তর ও মিশন পর্যায়ে বাংলাদেশি নেতৃত্ব বৃদ্ধির গুরুত্বও তুলে ধরেন।
শান্তিরক্ষী নির্বাচন ও প্রশিক্ষণে জাতিসংঘের মানদণ্ড কঠোরভাবে অনুসরণ করে বাংলাদেশ—এ কথাও তিনি উল্লেখ করেন। মানবাধিকার রক্ষায় জবাবদিহিতামূলক প্রশিক্ষণ ও যৌথ সহযোগিতা বৃদ্ধিতে আগ্রহের কথাও জানান।
এছাড়া তিনি জানান, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আগামী ১৩-১৪ মে বার্লিনে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেবে।
বৈঠকে ড. ইউনূস মিয়ানমারে চলমান সহিংসতা, সীমান্তে গোলাগুলি ও নাফ নদীসংলগ্ন অঞ্চলে সাধারণ মানুষের জীবিকা ব্যাহত হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এ ধরনের অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে তা বৃহত্তর নিরাপত্তা হুমকিতে রূপ নিতে পারে।
তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সম্মিলিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, ওই সফর রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের আশা জাগিয়েছে।