২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। তদন্তে তাকে ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’ বা ঊর্ধ্বতন কমান্ড দায়বদ্ধতার আওতায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার নির্দেশেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে ।
এই মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন অভিযুক্ত হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, গুম, অঙ্গহানি এবং গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুমানিক ২০টি অভিযোগ রয়েছে, যা পৃথকভাবে বিচার করা হবে ।
শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল বর্তমানে পলাতক। তাদের অনুপস্থিতিতে বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করা হবে, যারা আসামিদের পক্ষে আইনি সেবা প্রদান করবেন। পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞপ্তি জারি করে তাদের হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে। তারা অনুপস্থিত থাকলে পলাতক ঘোষণা করে বিচার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হবে ।
দেশ রূপান্তর
প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে আনুমানিক ৫০ জন সাক্ষী উপস্থাপন করা হবে। ডিজিটাল সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে শেখ হাসিনার বক্তব্যের অডিও ও ভিডিও রেকর্ডিং, টেলিফোন কথোপকথন এবং আন্দোলন দমনের সময়কার ভিডিও ফুটেজ ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হবে ।
প্রসিকিউশন টিম আশা করছে, ঈদুল আজহার ছুটির আগেই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করা হবে। এরপর ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠনের শুনানি, সাক্ষ্যগ্রহণ এবং যুক্তিতর্কের মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করবে ।
এই মামলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা প্রদান করতে চায়, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়