সত্যজিৎ দাস:
আজ ৮ মার্চ,”আন্তর্জাতিক নারী দিবস”—একটি দিন,যা শুধুমাত্র উদযাপনের জন্য নয়,বরং নারীর অধিকার,সমতা ও ক্ষমতায়নের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতির দিন। এ বছরের প্রতিপাদ্য “অধিকার,সমতা,ক্ষমতায়ন—নারী ও কন্যার উন্নয়ন”, যা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে এই লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানায়।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের তথ্য অনুযায়ী,বর্তমান গতিতে চললে পূর্ণ লিঙ্গ সমতা অর্জনে ২১৫৮ সাল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। পাঁচ প্রজন্ম অপেক্ষা করবে,নাকি এখনই উদ্যোগ নেবে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। নারীদের প্রতি বৈষম্য ও বঞ্চনা দূর করতে এখনই দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।
এই দিবসের সূচনা হয়েছিল ১৮৫৭ সালে নিউইয়র্কের একদল সাহসী নারী শ্রমিকের সংগ্রামের মাধ্যমে,যারা ন্যায্য মজুরি,কর্মঘণ্টা হ্রাস ও স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশের দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলেন। তাদের আন্দোলনের পর ১৮৬০ সালে গঠিত হয় ‘নারী শ্রমিক ইউনিয়ন’।
এরপর ১৯১০ সালে জার্মান নেত্রী ক্লারা জেটকিন কোপেনহেগেনের এক সম্মেলনে ৮ মার্চকে নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে প্রথমবারের মতো দিনটি পালন করে এবং ১৯৭৭ সালে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়।
বাংলাদেশে নারী দিবসের কর্মসূচিঃ-
আজকের দিনটিকে কেন্দ্র করে দেশে বিভিন্ন সংগঠন নানা আয়োজন করছে—
১) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ শহীদ মিনারে সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
২) জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে মানববন্ধন করবে।
৩) নারীমুক্তি কেন্দ্র নারী সমাবেশের মাধ্যমে সমঅধিকার ও সহিংসতা প্রতিরোধে কঠোর আইন বাস্তবায়নের আহ্বান জানাবে।
৪) হিল উইমেন্স ফেডারেশন নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ করবে।
৫) জাতীয় প্রেস ক্লাব ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র নারী মুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
নারী দিবস উদযাপন একদিনের আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি একটি চলমান আন্দোলন। সমাজ তখনই এগিয়ে যাবে,যখন নারীরা শিক্ষা,কর্মসংস্থান, পরিবার ও সামাজিক পরিসরে সমান সুযোগ পাবে।আসুন,আমরা সবাই একসঙ্গে নারী অধিকার ও সমতার জন্য কাজ করার শপথ নেই—কারণ সমতা মানেই সত্যিকারের উন্নয়ন।