ঢাকা, ৩ মার্চ ২০২৫: বাংলাদেশের রাজনীতিতে গত বছর ৫ আগস্টের পর পরিবর্তন এসেছে এক ঐতিহাসিক পর্ব। ছাত্রজনতার ব্যাপক গণ আন্দোলনের ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে, এবং সেই সময় শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করেন। তবে, সরকারের পতনের পর থেকে দেশব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদেরের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে একাধিক তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, তবে এখনও তিনি ধরা পড়েননি। সম্প্রতি নাগরিক টিভির সাংবাদিক নাজমুস সাকিবের উপস্থাপনায় একটি বিস্ফোরক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।
সাংবাদিক সাকিব জানান, ওবায়দুল কাদেরের গত গত বছরের ৫ আগস্টের ফোন লোকেশন ট্র্যাকিং করে মোহাম্মদপুরের কাছাকাছি একটি স্থান চিহ্নিত হয়েছে। এটি একটি রহস্যজনক তথ্য, যেহেতু ওই দিন থেকেই তার ফোনে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময়ের পর থেকে অনেকেই দাবি করছেন, কাদের ওই দিন মেঘলা নামক একটি নবাগত নায়িকার বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন।
সাংবাদিক সাকিব আরও জানান, মেঘলা যাতে কাদেরের গোপনীয়তা ফাঁস না করেন, সেজন্য তাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে যে, মেঘলাকে হত্যা করে তার মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। এর পর থেকে, মেঘলার মৃত্যু নিয়ে নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে এবং এ ঘটনার সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের সম্পর্কের বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
এদিকে, ওবায়দুল কাদেরের বর্তমান অবস্থান নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে। নানা সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে যে, তিনি সিলেট, হংকং, ভারতের মেঘালয়ে বিভিন্ন সময় পালিয়ে থাকার চেষ্টা করেছেন। তবে, বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন, তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কাদেরের এই গোপনীয়তা এবং পালিয়ে যাওয়ার পেছনে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সরকারবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে পারে।
এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি এই অভিযোগগুলোর সত্যতা প্রমাণিত হয়, তবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক বড় ধরনের উত্তেজনা এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হতে পারে।
তবে, এখনও পর্যন্ত ওবায়দুল কাদের বা তার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে উদ্বেগ এবং প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে, যেহেতু এমন গুরতর অভিযোগ দেশের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে তোলা হচ্ছে।
এখনো কোনো তদন্ত শুরু হয়নি, তবে বিশেষজ্ঞরা দাবি করছেন, এসব ঘটনার সঠিক তদন্ত এবং প্রমাণের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।