৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণআন্দোলনের মুখে পতন হয় আওয়ামী শেখ হাসিনার। আওয়ামী সরকারের পতনের পর দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনাও ভারতে পালিয়ে আশ্রয় নেন।
গত ১০ মার্চ আলজাজিরার সাংবাদিক জুলকার নাইন সায়েরের এক পোস্ট ঘিরে নতুন করে শেখ হাসিনার ফিরে আসা নিয়ে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্যকর । গেল কয়েকদিন আগেই প্রথম সারির ভারতীয় কয়েকটি গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার ফিরে আসা নিয়ে প্রতিবেদনে দেশজুড়ে উঠে চাঞ্চল্য। যেখানে জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা রাখা ছাত্র-জনতাসহ সবার একটাই কথা শেখ হাসিনা ফিরে আসবে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার জন্য।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে শুরু করেছে, আর অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, কারা এই দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের নকশা আঁকছে, যারা শহীদদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে গণঅভ্যুত্থানকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে চাইছে? যদিও প্রশ্নটা বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে, তার উত্তর এখনও স্পষ্ট হয়নি।
গত ৫ আগস্ট, আন্দোলনের মুখে, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। তবে, গণহত্যার বিচার শুরু হওয়ার আগেই, আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে একদল ইনসাইডার গোপনে কাজ করে যাচ্ছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, এই ইনসাইডাররা কারা?
গত ১৫ বছর ধরে রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে শেখ হাসিনা শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করেছেন, এবং তাই অনেকেই সন্দেহ করছেন যে, হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও, তিনি ভারতে থেকে পুনরায় ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছেন। এ ধরনের চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছেন দেশের শীর্ষ ১৪ জন ইনসাইডার, যারা গোপনে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর জন্য কাজ করছেন। সম্প্রতি, আলজাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকার নাইন সায়রের ফেসবুক পোস্টে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
ফেসবুক পোস্টে সায়র লিখেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কেন্দ্রে কিছু উপদেষ্টা যারা অতি দুরভী উদ্দেশ্য নিয়ে সরকারে প্রবেশ করেছেন, তারা কখনও চাইছেন না যে, সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে একটি রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় আসুক। তারা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে, বিশেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভিতরে।
এদিকে, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ইনসাইডাররা, যারা ইম্পোস্টারের মতো কাজ করছেন, তাদের বিষয়ে আভাস দিয়েছেন সায়র। তার পোস্টে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা নয়জন, এবং পাঁচজন আউটসাইড এক্টর গোপনে এই ষড়যন্ত্রে জড়িত। তারা আসন্ন নির্বাচনের জন্য বড় ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম “টাইমস অফ ইন্ডিয়া” একটি প্রতিবেদনে দাবি করেছে যে, শেখ হাসিনা পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশে ফিরবেন। প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার দেয়া সাক্ষাৎকারে বলা হয়, খুব শিগগিরই শেখ হাসিনা বাংলাদেশের নেতৃত্বে আবার ফিরে আসবেন।
এছাড়া, হাসনাত আব্দুল্লাহ শেখ হাসিনার ফিরে আসার বিষয়ে আশঙ্কাজনক মন্তব্য করেছেন, যা থেকে জানা যায় যে, শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার গোপন তৎপরতা চলছে এবং তার ব্যাপারে উচ্চপর্যায়ের মহলও অবগত রয়েছে। তবে দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদরা এ বিষয়ে কোনো প্রতিকার খুঁজছেন কিনা, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
তবে, শেখ হাসিনাকে ফেরাতে যারা কাজ করছে, তারা শুধুমাত্র ১৪ জন ইনসাইডার নাকি ধীরে ধীরে আরও অনেকের মুখোশ খুলে যাবে, তা সময়ই বলে দেবে।