বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটি তার বক্তব্যকে “অগ্রহণযোগ্য ও বিভ্রান্তিকর” বলে আখ্যা দিয়ে আনুষ্ঠানিক নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
কী বলেছেন রিজভী?
বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত রুহুল কবির রিজভী সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কিছু দল নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারছে না।” তার এই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি ও জামায়াত এক সময়কার ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের মধ্যে দুরত্ব বেড়েছে। বিশেষ করে, ২০১৮ সালের নির্বাচন এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে বিএনপির ভেতরেই নানা প্রশ্ন উঠেছে।
জামায়াতের পাল্টা প্রতিক্রিয়া
রিজভীর বক্তব্যের পর জামায়াতের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “বিএনপির একাংশ জামায়াতকে নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দিচ্ছে, যা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী।”
জামায়াতের এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, “আমরা সবসময় জাতীয় রাজনীতিতে গঠনমূলক ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছি। বিএনপি যদি আমাদের সঙ্গে রাজনৈতিক ঐক্য চায়, তাহলে সম্মানজনক অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।”
জামায়াতের এই কড়া প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে— বিএনপি-জামায়াত জোট কি ভাঙার পথে? নাকি এটি শুধুই কৌশলগত অবস্থান?
বিএনপি-জামায়াত সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কী?
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিএনপি এখন আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক চাপে রয়েছে। বিশেষ করে, পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কৌশলে বিএনপি জামায়াত থেকে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করছে।
অন্যদিকে, জামায়াতও নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে চিন্তা করছে। দলটি এখন স্বাধীনভাবে রাজনীতিতে টিকে থাকার চেষ্টা করছে এবং বিএনপির ছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এখন প্রশ্ন হলো, বিএনপি-জামায়াত ঐক্য কি ধরে রাখা সম্ভব? নাকি এই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ফলে দুই দলের সম্পর্ক আরও খারাপের দিকে যাবে? সময়ই বলে দেবে তাদের ভবিষ্যৎ কৌশল কোন দিকে যায়।