মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে নতুন আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের একটি সম্ভাব্য পথ তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন সিনেটর মার্কো রুবিও এই আলোচনা প্রসঙ্গে বলেছেন, এটি “একটি দীর্ঘ এবং কঠিন যাত্রার প্রথম পদক্ষেপ” মাত্র।
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে মার্কিন ও রাশিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য সম্ভাব্য পথ খুঁজে বের করা এবং উভয় পক্ষের জন্য গ্রহণযোগ্য একটি শান্তি চুক্তির ভিত্তি তৈরি করা।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র জানান, আলোচনায় প্রধানত তিনটি বিষয় আলোচিত হয়েছে—
- ইউক্রেনের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা: রাশিয়া দখল করা ইউক্রেনের অঞ্চলগুলো ফিরিয়ে দেবে কিনা, তা আলোচনার মূল বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল।
- নিরাপত্তা নিশ্চয়তা: ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা ও তার সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান নিশ্চিত করতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
- অর্থনৈতিক ও সামরিক নিষেধাজ্ঞা: পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিল করার সম্ভাব্য উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তবে এই আলোচনায় ইউক্রেনের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না, যা ইউক্রেন সরকার ও তার পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, “আমাদের ছাড়া কোনো আলোচনা ফলপ্রসূ হবে না। কিয়েভের সম্মতি ছাড়া কোনো চুক্তি কার্যকর হবে না।”
রাশিয়া এই আলোচনার গুরুত্ব স্বীকার করলেও কোনো আপোষের ইঙ্গিত দেয়নি। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, “রাশিয়ার বৈধ স্বার্থকে সম্মান করা ছাড়া কোনো শান্তি পরিকল্পনা সফল হবে না। পশ্চিমা দেশগুলোর উচিত বাস্তবতাকে মেনে নেওয়া।”
সৌদি আরব এই আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে, যা দেশটির আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্কো রুবিও আরও বলেন, “এটি কেবলমাত্র প্রথম ধাপ। বাস্তবতা হলো, এটি একটি দীর্ঘ এবং কঠিন প্রক্রিয়া হতে চলেছে। উভয় পক্ষকে কিছু সমঝোতায় আসতে হবে।”
তবে এই আলোচনা কোনো তাৎক্ষণিক ফলাফল বয়ে আনবে না বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। পশ্চিমা দেশগুলোও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং ইউক্রেনের সমর্থন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছে।
যদিও এই আলোচনাকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, তবে বাস্তবসম্মত সমাধান আসতে অনেক সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও আলোচনার মাধ্যমে উভয় পক্ষ কি সমাধানে পৌঁছাতে পারে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।