ঢাকা: ৩ মার্চ, ২০২৫ – প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, “সম্ভবত এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।” সোমবার (৩ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশ সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশনার হাজা লাহবিবের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ভোট সম্ভবত এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।”
ইইউ কমিশনার হাজা লাহবিব এ সময় অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “আপনি এক ব্যতিক্রমী সময়ে অসাধারণ কাজ করেছেন। আমি আপনাদের সঙ্গে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে প্রস্তুত রয়েছি।”
এছাড়া, লাহবিব অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচির প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বলেন, “আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত পরিবর্তনের সময় দেখছি। আমরা জানি, যখন কিছু পরিবর্তন করতে চান, তখন প্রতিরোধ আসে। তাই অনেক কিছু করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। আমরা আপনাদের পাশে আছি।”
ইইউ ৬৮ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা দেবে রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলায়
এছাড়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশনার লাহবিব প্রধান উপদেষ্টাকে জানান যে, চলতি বছর ইইউ রোহিঙ্গা সঙ্কট এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে সহায়তা দিতে ৬৮ মিলিয়ন ইউরো অনুদান প্রদান করবে। বিশেষ করে, মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার শিকার মানুষদের জন্য এ সহায়তা প্রদান করা হবে।
তিনি আরও বলেন, “যদিও এই অর্থের পরিমাণ গত বছরের প্রাথমিক ইইউ অনুদানের চেয়ে বেশি, তবুও এটি রোহিঙ্গা শিবিরে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি রোধ করার জন্য যথেষ্ট নয়, কারণ তহবিল ঘাটতি ক্রমশ বাড়ছে।”
রোহিঙ্গা সঙ্কটের মানবিক দৃষ্টিকোণ
অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গাদের মানবিক সঙ্কট মোকাবিলায় বাংলাদেশের সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। এটি বছরের পর বছর ধরে চলছে, কিন্তু এখনো কোনো সমাধান নেই।”
তিনি বলেন, “শান্তিই এই সঙ্কটের একমাত্র সমাধান।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের সব ধরনের দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, যার মধ্যে মানবসৃষ্ট দুর্যোগও অন্তর্ভুক্ত। ভুল তথ্য (ডিসইনফরমেশন) ছড়ানোও কিন্তু দুর্যোগের মধ্যে পড়ে।”
ইইউ কমিশনারের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয়
ইইউ কমিশনার লাহবিব দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণের প্রস্তুতি গ্রহণের ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “ইইউ বাংলাদেশকে ‘উত্তম অনুশীলন’ এবং প্রস্তুতির কৌশল বিনিময়ের জন্য আগ্রহী।”
এই বৈঠকটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের সহযোগিতা এবং রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলায় সমাধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।