প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে দলটির নেতাদের মধ্যে যারা হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত, তাদের দেশের আদালতে বিচার করা হবে।
গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই হবে প্রধান উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অঙ্গীকার করেছে এবং কোনো দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভোট বিলম্বিত করা হবে না। তিনি বলেন, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী দুটি সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে—
১. রাজনৈতিক দলগুলো যদি সীমিতসংখ্যক সংস্কার চায়, তাহলে নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। ২. বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়া প্রয়োজন হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে এবং তারিখ পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই।
আওয়ামী লীগ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ড. ইউনূস জানান, জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী মিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত সম্ভাব্য অপরাধের অভিযোগ থাকায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি), হেগে মামলা করার বিষয়টি সরকার বাতিল করেনি। এটি এখনো আলোচনায় রয়েছে।
ঐকমত্য কমিশন ও সংস্কার পরিকল্পনা প্রধান উপদেষ্টা জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে ঐকমত্য কমিশন। তিনি বলেন, সরকার ‘জুলাই সনদ’ চূড়ান্ত ও স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা করছে, যা সরকারের নীতিগুলোকে দিকনির্দেশনা দেবে।
রোহিঙ্গা সংকট ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা বিদ্রোহী নেতা আতাউল্লাহর গ্রেফতারকে শরণার্থী শিবিরে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতিশ্রুতি হিসেবে দেখছেন। তারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণকারী আরাকান আর্মির সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ঢাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সহায়তা সংগ্রহে কাজ করছে এবং আসন্ন জাতিসংঘের বিশেষ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকট ইস্যুটি বিশ্বব্যাপী গুরুত্ব পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ভুল তথ্য মোকাবেলা ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ড. কমফোর্ট ইরো বাংলাদেশ ও অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ভুল তথ্য প্রচার মোকাবিলায় সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারিত বেশির ভাগ ভুল তথ্য ভারতীয় গণমাধ্যম থেকে আসছে, যা দুঃখজনক। তবে তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দৃঢ় সম্পর্কের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।