রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং আহত হয়েছেন অন্তত ২৭ জন। আহতদের মধ্যে অনেকেই দগ্ধ অবস্থায় আছেন এবং তাদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
দুর্ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। উদ্ধার কার্যক্রমে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও অংশ নিচ্ছেন। ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার খালেদা খানম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মাইলস্টোন কলেজের প্রভাষক রেজাউল ইসলাম জানান, ছুটির আগ মুহূর্তে হঠাৎ একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান কলেজ ভবনের একটি অংশে আঘাত হানে। সেটি জুনিয়র সেকশনের বিল্ডিংয়ের ওপর পড়ে, যেখানে নার্সারি থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস চলে। তার ভাষায়, “বিমানের ধাক্কায় গেটের অংশে গর্ত হয়ে যায় এবং সেখান থেকে আগুন ধরে যায়।”
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কলেজের বাগান সংলগ্ন ভবনের নিচতলায় আগুন জ্বলছে এবং দমকল কর্মীরা তা নেভানোর চেষ্টা করছেন। ভবনের অন্যান্য ফ্লোর থেকে শিক্ষার্থীদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও সমবেদনা জানিয়েছেন বিভিন্ন জাতীয় নেতৃবৃন্দ।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক শোকবার্তায় বলেন, “এই দুর্ঘটনায় বিমানসেনা ও মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক-কর্মচারীসহ অন্যান্যদের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। জাতির জন্য এটি একটি গভীর বেদনার ক্ষণ।” তিনি আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন এবং সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে উদ্ধার কাজ চালানোর নির্দেশ দেন।
এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লেখেন, “আমরা মাইলস্টোন কলেজে বিমান দুর্ঘটনার হৃদয়বিদারক ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত। … এই দুঃসময়ে যেন আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াই।”
তিনি আরও বলেন, “একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে আমাদের এই সংকট কাটিয়ে উঠতেই হবে।”
বর্তমানে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।