ভারতের আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানটি বৃহস্পতিবার উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই বিধ্বস্ত হয়। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা ২৪২ আরোহীর মধ্যে একমাত্র একজন ছাড়া সবাই প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২৬ জন মুসলিম ছিলেন, যারা আহমেদাবাদ থেকে যাত্রী হিসেবে ওই ফ্লাইটে উঠেছিলেন। বিমানে ছিলেন দুইজন পাইলট, ১০ জন কেবিন ক্রু এবং ২৩০ জন যাত্রী। উড্ডয়নের পরপরই বিমানটি শহরের পাশেই একটি আবাসিক এলাকায় আছড়ে পড়ে এবং মুহূর্তেই আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় দমকল বাহিনী, উদ্ধারকর্মী এবং নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
এ দুর্ঘটনার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গভীর শোক প্রকাশ করে দোষীদের খুঁজে বের করতে তদন্তে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত কার্যক্রমে ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ দল অংশ নিচ্ছে। তারা বিমানের উড্ডয়ন কনফিগারেশন, ফ্ল্যাপ পারফরম্যান্স, ইঞ্জিন কার্যকারিতা এবং পাইলট প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিগত দিক গভীরভাবে বিশ্লেষণ করছে। তদন্ত চলাকালীন আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে বোয়িং ৭৮৭ বিমান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে নিহত মুসলিম যাত্রীদের পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে মুসলিম কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ। দাফনের প্রস্তুতি, আইনি সহায়তা ও মানসিক কাউন্সেলিং সেবায় স্থানীয় সংগঠনগুলো সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। মুসলিম যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন ফাইজান রফিক, হালানি পরিবার, সৈয়দ ইনায়াত আলীর পরিবার, নানাবাওয়া এস., তাজুম আদম, ভোহরা ও তপেলিওয়ালা পরিবারের সদস্যরা। প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি একাধিক শিশুও এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারের জন্য সহায়তা তহবিল গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। টাটা গ্রুপ দুর্ঘটনার পরপরই একটি জরুরি সহায়তা সেল চালু করেছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার জানিয়েছে। বিমান দুর্ঘটনার এই মর্মান্তিক ঘটনা পুরো ভারতজুড়ে শোকের ছায়া ফেলেছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।