ইরানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েলের সম্মতির পেছনে মার্কিন চাপ এবং ইরানি পাল্টা হামলার ভয়াবহতা বড় ভূমিকা রেখেছে—এমন মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের অন্যতম শীর্ষ রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও রাইখম্যান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ওরি গোল্ডবার্গ। আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইসরায়েল এখন দাবি করছে তারা ইরানে অভিযান চালিয়ে সব লক্ষ্য অর্জন করেছে—এই বক্তব্যকে তিনি ‘হাস্যকর’ বলে অভিহিত করেন। গোল্ডবার্গের মতে, ইসরায়েল আসলে কী চেয়েছিল তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে। একবার বলা হয় তারা ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংস করতে চায়, আবার কখনো বলা হয় শাসনব্যবস্থার পতন ঘটানো তাদের লক্ষ্য। ফলে ইসরায়েলের প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
তিনি আরও বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কিছুটা ক্ষতি হতে পারে, কিন্তু তাদের ইউরেনিয়াম মজুদের আদৌ কোনো ক্ষতি হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ইরান কখনোই ইসরায়েলের প্রতি কোনো তাৎক্ষণিক পরমাণু হুমকি তৈরি করেনি। তাই এই অভিযানের পরেও মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা বাস্তবতায় কোনো মৌলিক পরিবর্তন আসেনি।
গোল্ডবার্গের ভাষ্য অনুযায়ী, নেতানিয়াহুর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পেছনে দুটি প্রধান কারণ ছিল—এক, ইরানের পাল্টা হামলায় সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি এবং দুই, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরাসরি চাপ। নেতানিয়াহু বিশ্বাস করেছিলেন ট্রাম্প তার পাশে থাকবেন, এবং বাস্তবেই তাই হয়েছে। এখন সেই ভরসার প্রতিদান দিতে নেতানিয়াহুর হাতে বিকল্প কিছু নেই। তাকে ট্রাম্পের রাজনৈতিক এজেন্ডা, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে একটি রাজনৈতিক সমঝোতার রূপরেখা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতেই হবে।
এই প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান কূটনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তগুলো এখন অনেকটাই নির্ভর করছে ট্রাম্প প্রশাসনের লক্ষ্য পূরণে কীভাবে সহায়তা করা যায়, তার ওপর।