বিনোদন ডেস্ক:
ভারতের হরিয়ানায় মডেল শীতল চৌধুরী হত্যাকাণ্ডে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। নিখোঁজের দুই দিন পর সোমবার (১৬ জুন) সকালে রাজ্যের সোনিপাত জেলার খরখোদা এলাকার একটি খাল থেকে তাঁর গলা কাটা ও ছুরিকাঘাতে ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় শীতলের প্রেমিক সুনীলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশি জেরায় হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তিনি।
মডেল ও অভিনেত্রী শীতল, যিনি সিমি চৌধুরী নামেও পরিচিত ছিলেন, শনিবার রাতে পানিপাত জেলার আহার গ্রামে একটি মিউজিক ভিডিওর শুটিংয়ে অংশ নিতে যান। রাত সাড়ে ১০টার দিকে সেখানে পৌঁছান তার প্রেমিক সুনীল। দু’জনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়, যা দ্রুতই সহিংসতায় রূপ নেয়।
রাত প্রায় দেড়টার দিকে শীতল তার বোনকে ভিডিও কলে জানান, সুনীল তাকে মারধর করছেন। এরপর থেকেই তাঁর ফোন বন্ধ হয়ে যায় এবং আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
পরদিন রবিবার (১৫ জুন) সোনিপাতের খালে সুনীলের গাড়ি উদ্ধার করে পুলিশ। গাড়ির ভেতরে শীতলের কোনো চিহ্ন না মেলায় সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। পরবর্তীতে খাল থেকে শীতলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের গলা কাটা এবং শরীরে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। হাতে ও বুকে উলকি দেখে পরিবার মরদেহটি শনাক্ত করে।
প্রাথমিকভাবে সুনীল এই ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি দাবি করেন, গাড়ি দুর্ঘটনায় খালে পড়ে যায়, তিনি কোনোমতে সাঁতরে উঠে আসলেও শীতল ডুবে যান। কিন্তু পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে একপর্যায়ে হত্যার দায় স্বীকার করতে বাধ্য হন তিনি।
তদন্তে উঠে এসেছে, শীতল ও সুনীল প্রায় ছয় বছর ধরে পরিচিত। শীতল আগে সুনীলের মালিকানাধীন হোটেলে কাজ করতেন। সুনীল তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেও পরে শীতল জানতে পারেন, সুনীল বিবাহিত এবং তার দুটি সন্তান রয়েছে। এই সত্য জানার পর বিয়েতে রাজি হননি শীতল। অপরদিকে শীতল নিজেও বিবাহিত এবং তার পাঁচ মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে।
হত্যার পর সুনীল শীতলের মরদেহ ও গাড়ি খালে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যান। পরে তাকে একটি হাসপাতালে খুঁজে পায় পুলিশ এবং সেখানেই তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন।
এ ঘটনায় ভারতের বিনোদন ও মডেলিং অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মডেল শীতলের নির্মম মৃত্যু ও প্রেমিকের হাতে খুন হওয়াকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নেটিজেনরা।
তদন্ত চলছে এবং সুনীলের বিরুদ্ধে হত্যার মামলা দায়ের করে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে হরিয়ানা পুলিশ।