বর্তমানে সড়ক-মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা। এসব বাহনের কারণে সড়কে বিশৃঙ্খলা বাড়ছে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে। ঈদের ছুটির চার দিনে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আহতদের মধ্যে ৩২ দশমিক ১০ শতাংশই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দুর্ঘটনার শিকার। মূল সড়কে কোনো নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই এই বাহনগুলোর চলাচল জননিরাপত্তায় বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুযোগ পেলেই মহাসড়কেও উঠে পড়ছে এসব রিকশা, অথচ নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনার খবর আসছে, আর তাই এই বাহন বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন অনেকে।
জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী আসিফ আকবরও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, “টেসলা খ্যাত ব্যাটারিচালিত রিকশায় জনজীবন দুঃসহ, সরকার আত্মসমর্পণ করেছে, এদের প্রতিরোধের সময় চলে এসেছে।” তার এই মন্তব্য ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকে মন্তব্য করেছেন, এটি সময়োপযোগী বক্তব্য। কেউ কেউ আবার প্রশ্ন তুলেছেন, এ বাহন নিষিদ্ধের আগে চালকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা উচিত কিনা। উত্তরে আসিফ লিখেছেন, “এর আগে তাদের কী কর্ম ছিল?”
এদিকে, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, প্রধান সড়কে কোনোভাবেই ব্যাটারিচালিত রিকশা বা অটোরিকশা চলতে পারবে না। ইতোমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ব্যারিকেড বসানো শুরু হয়েছে। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ব্যাটারিচালিত রিকশার নতুন ডিজাইন তৈরি করছে। সেই ডিজাইন অনুমোদিত হলে নির্দিষ্ট লাইসেন্সপ্রাপ্ত বাহনগুলো নির্দিষ্ট রুটে চলাচলের অনুমতি পাবে। তবে, রাজধানীর প্রধান সড়কে এসব বাহনের চলাচল কোনোভাবেই অনুমোদন করা হবে না।
সরকার পূর্বেও ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধের উদ্যোগ নিয়েছিল, কিন্তু কার্যকর ফলাফল আসেনি। বর্তমানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এই বাহনের কারণে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে।