বাংলাদেশের গুণী অভিনেত্রী ডলি জহুর এক জীবনে যেমন পেয়েছেন অসংখ্য স্বীকৃতি ও সম্মাননা, তেমনি এবার তিনি যুক্ত হতে চলেছেন এক নতুন ও বিশেষ তালিকায়। মায়ের চরিত্রে তাঁর অসামান্য অভিনয়গুণের জন্য এবার তিনি পাচ্ছেন ‘মা পদক’। ১১ মে বিশ্ব মা দিবসে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পদক তুলে দেওয়া হবে তাঁর হাতে।
‘মা পদক’-এর সূচনা ২০২২ সালে। আলী-রূপা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এবং মাদিহা মার্সিহা অ্যাডভারটাইজিংয়ের আয়োজনে প্রতি বছর এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। এর আগেও এই পদকে ভূষিত হয়েছেন দেশের তিন কিংবদন্তি অভিনেত্রী—শবনম (২০২২), দিলারা জামান (২০২৩), এবং আনোয়ারা (২০২৪)। এবার এই তালিকায় যুক্ত হচ্ছেন ডলি জহুর, যা তার দীর্ঘ অভিনয়জীবনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
এই সম্মাননা পাওয়ার খবরে উচ্ছ্বসিত ডলি জহুর জানালেন, “জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার থেকে শুরু করে আজীবন সম্মাননাসহ বহু পুরস্কারে আমি ভূষিত হয়েছি। কিন্তু শুধুমাত্র মায়ের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য এমন কোনো স্বীকৃতি আগে পাইনি। তাই এই পুরস্কারটি আমার কাছে খুবই বিশেষ।” তিনি আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন।
ডলি জহুরের প্রথম চলচ্চিত্র ছিল ‘শঙ্খনীল কারাগার’, যা নির্মিত হয়েছিল হুমায়ূন আহমেদের একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে। এই চলচ্চিত্রে ‘রাবেয়া’ চরিত্রে তার অনবদ্য অভিনয়ের জন্য তিনি অর্জন করেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। পরবর্তীতে হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’-তেও তিনি অভিনয় করেন। তার মায়াভরা চোখ, সংবেদনশীল সংলাপ ও মাতৃত্বের আবেগময় রূপান্তর তাকে পরিণত করেছে বাংলা চলচ্চিত্র ও নাটকের ‘মায়ের প্রতিমূর্তি’ হিসেবে।
ডলি জহুরের মতো একজন গুণী শিল্পীর হাতে মা পদক তুলে দেওয়া নিঃসন্দেহে বাংলা সংস্কৃতি ও অভিনয়ের জগতে এক সম্মানজনক ঘটনা। তিনি শুধু অভিনয়ে নন, বরং এক নিবেদিত শিল্পী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন দর্শকদের ভালোবাসায় ও সহকর্মীদের শ্রদ্ধায়।