মারুফ সরকার, প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের টেলিভিশন গ্রাফিক্স ও মোশন ডিজাইনের জগতে আরও একটি গৌরবময় অর্জন যুক্ত হলো। টেলিভিশন প্রোগ্রাম ব্র্যান্ডিংয়ে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ “এক্সেলেন্স ইন সাকসেস অ্যাওয়ার্ড ২০২৫”-এ ‘সেরা মোশন গ্রাফিক্স আর্টিস্ট (প্রোগ্রাম ব্র্যান্ডিং)’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন দেবাশীষ দাস।
গত ২৬ মে রাজধানীর স্কাই সিটি ব্যাংকুয়েট হলে আয়োজিত এক জমকালো অনুষ্ঠানে এই সম্মাননা তুলে দেন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শিরীন শীলা এবং কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান লায়ন মো. মুজিবুর রহমান। আয়োজনটি যৌথভাবে পরিচালনা করে আন্তর্জাতিক দুটি প্রতিষ্ঠান—Green Leaf ও World of Unity। অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিল একুশে টেলিভিশন।
বর্তমানে মাছরাঙা টেলিভিশনের গ্রাফিক্স বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দেবাশীষ দাস। ২০১১ সাল থেকে মাছরাঙায় কর্মরত থেকে তিনি অসংখ্য টিভি অনুষ্ঠানের ভিজ্যুয়াল ব্র্যান্ডিং ও গ্রাফিক্স নির্মাণে এনেছেন নতুনত্ব ও শৈল্পিক পরিপূর্ণতা।
তাঁর কাজের বিশেষত্ব হলো—প্রতিটি প্রোগ্রামের মূল ভাবনা ও আবেগের ভিজ্যুয়াল রূপায়ণ। ওপেনিং টাইটেল, থিমেটিক অ্যানিমেশন, স্ক্রিন লেআউট, গ্রাফিক্স প্যাকেজ ও স্টোরিবোর্ড নির্মাণে তিনি নির্মাণশৈলী ও টেকনিক্যাল দক্ষতার ব্যতিক্রমী সমন্বয় ঘটিয়েছেন।
দেবাশীষ দাসের সৃজনশীলতা মাছরাঙার জনপ্রিয় নাটক, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন এবং বিশেষ দিবস উপলক্ষে তৈরি ভিজ্যুয়াল কনটেন্টে দর্শকদের চেনা রূপে ধরা দেয়। টাইপোগ্রাফি, রঙের ব্যবহার, অ্যানিমেশন সিনক্রোনাইজেশন—সবই তাঁর সূক্ষ্ম দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ।
গ্রাফিক ডিজাইনের পাশাপাশি দেবাশীষ দাস প্রশিক্ষণ ও শিক্ষকতাতেও অবদান রাখছেন। ২০১৮ সাল থেকে তিনি পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটে মোশন গ্রাফিক্স ফ্যাকাল্টি এবং ২০২২ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যুক্ত রয়েছেন।
২০০৭ সালে আরটিভিতে মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। এরপর যমুনা টিভিতে দায়িত্ব পালনকালে তিনি বাংলাদেশের টেলিভিশন গ্রাফিক্স শিল্পে নতুন ধারার সূচনা করেন।
সম্প্রচারমাধ্যম ছাড়াও দেবাশীষ দাস বই প্রকাশনা শিল্পে একজন খ্যাতিমান কভার ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি প্রায় ২০০টিরও বেশি বইয়ের প্রচ্ছদ ডিজাইন করেছেন এবং কাজ করেছেন দেশের খ্যাতিমান লেখকদের সঙ্গে।
টেলিভিশন ব্র্যান্ডিংয়ে তাঁর অব্যাহত অবদান, প্রযুক্তিনির্ভর চিন্তাধারা ও ধ্রুপদী শৈলী আগামী প্রজন্মের গ্রাফিক ডিজাইনারদের জন্য হয়ে থাকবে পথপ্রদর্শক। “এক্সেলেন্স ইন সাকসেস অ্যাওয়ার্ড ২০২৫” তাঁকে যেমন সম্মানিত করেছে, তেমনি এ শিল্পকে দিয়েছে আরও এক অনুপ্রেরণার গল্প।