আতাউর রহমান কাওছার, ওসমানীনগর (সিলেট):
সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ ধীরগতিতে এগোচ্ছে, যার ফলে ওসমানীনগর উপজেলার শেরপুর থেকে নাজিরবাজার পর্যন্ত অংশে যাত্রী ও যানবাহন চলাচলে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণকাজ চলায় মহাসড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দ, যা দূরপাল্লার যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
সরকারি জমিতে থাকা অবৈধ স্থাপনাগুলো অপসারণ করে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও মালিকদের পুনর্বাসন কাজ প্রায় শেষ হলেও ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির অধিগ্রহণে ধীরগতি প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, একটি চক্র জমির মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে জমির শ্রেণি ও ভবনের ধরণ পরিবর্তন করে সরকারের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। এসব প্রক্রিয়ায় কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই চক্র। এতে সময়মতো প্রকল্প শেষ হওয়া নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে সন্দেহ।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নির্মিতব্য বেশ কয়েকটি ব্রিজ ও কালভার্টের পাশে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করার মতো কোনো নালা নেই। একসময় যেসব স্থানে পানি চলাচলের ব্যবস্থা ছিল, বর্তমানে সেখানে বসতবাড়ি, মার্কেট ও অন্যান্য স্থাপনা তৈরি হওয়ায় পানি আটকে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে। অনেক স্থানে ছোট ও কম গভীরতার কালভার্ট নির্মাণ করায় ভবিষ্যতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
দয়ামীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসটিএম ফখর উদ্দিন বলেন, অধিকাংশ কালভার্টের আকার ছোট এবং গভীরতা যথেষ্ট নয়, ফলে বন্যার সময় পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হবে। কাজগুলো যথাযথভাবে মূল্যায়ন করে দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান তিনি।
প্রকল্পে কাজ করা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তমা গ্রুপের প্রকল্প ব্যবস্থাপক উদয়ন চক্রবর্তী জানান, অধিগ্রহণকৃত জমিতে কাজ চলমান রয়েছে এবং ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণে ডিজাইন অনুযায়ী টেস্টিং করা হচ্ছে। সিলেট অংশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক দেবাশিষ রায় বলেন, আগের কালভার্টের স্থানেই নতুন করে নির্মাণ হচ্ছে এবং যেখানে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে, সেখানে জমি অধিগ্রহণ করে পানি চলাচলের ব্যবস্থা রাখা হবে। তিনি জানান, ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলতি বছরের মধ্যে শেষ হলে আগামী তিন বছরের মধ্যে মহাসড়কের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে কর্তৃপক্ষ মহাসড়কের কাজ তদারকি করছে। স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করলে তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলমান এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল ভূমিকা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা না হলে এ উন্নয়ন কাজ সময়মতো শেষ হওয়া কঠিন হয়ে পড়বে বলেই মনে করছেন সচেতন মহল।