জাবেদ শেখ, শরীয়তপুর প্রতিনিধি:
শরীয়তপুরে অবশেষে দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলো কোটাপাড়া সেতু। পরিত্যক্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ পুরনো সেতুর স্থানে নতুন এই সেতু খুলে দেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। তবে রাস্তার নির্মাণ কাজ এখনও সম্পূর্ণ না হওয়ায় চালকদের অভিযোগ-আক্ষেপ রয়ে গেছে।
বহু বছর ধরে অবহেলায় ছিল পুরনো সেতু
স্থানীয়রা জানান, পুরনো কোটাপাড়া সেতু ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। একসাথে দুইটি গাড়ি পারাপার সম্ভব ছিল না। গর্ত আর ভাঙা রেলিংয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলতে হতো গাড়ি ও মানুষকে।
নতুন সেতু চালুর প্রথম দিন—৩ জুন, মঙ্গলবার—সেতু এলাকায় দেখা গেছে উৎসুক মানুষের ভিড়। স্থানীয় নারী-পুরুষ ও শিশুরা কেউ নদী দেখছে, কেউ ছবি তুলছে, কেউ সেতুর ওপর বসে আড্ডা দিচ্ছে।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন,
“এই সেতুটা আমাদের বহুদিনের স্বপ্ন ছিল। আগের সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতাম। এখন অন্তত নিরাপদে চলতে পারছি।”
ড্রাইভারদের আক্ষেপ: সেতু হলো, কিন্তু রাস্তা এখনো হয়নি
যদিও সেতুটি চালু হয়েছে, কিন্তু সংযোগ সড়কের কাজ এখনও অসম্পূর্ণ। ফলে ড্রাইভারদের অখুশি মনোভাবও স্পষ্ট।
শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের এক চালক বলেন,
“সেতু তো ভালো হইছে, কিন্তু রাস্তা-ঘাট তো ভাঙা। যদি সেতুর মতো রাস্তার কাজও শেষ হইতো, তাইলে শরীয়তপুরবাসী একেবারে খুশি হইতো।”
দীর্ঘসূত্রতা ও জটিলতায় প্রকল্প পিছিয়েছে চার বছর
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, ২০২০ সালের মার্চে ১ হাজার ৬৮২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে পদ্মা সেতুর নাওডোবা প্রান্ত থেকে শরীয়তপুর শহর পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং দুটি বড় ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের জুনে, কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণ, কোভিড পরিস্থিতি এবং নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী নাবিল হোসেন জানান,
“ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতা কাটিয়ে এখন দ্রুতগতিতে কাজ চলছে।”
স্থানীয়দের প্রত্যাশা: যেন রাস্তার কাজও দ্রুত শেষ হয়
এক মোটরসাইকেল চালক বলেন,
“সেতু খুলে দেওয়ায় অনেক উপকার হয়েছে, যানজট কমেছে। আগে পরিত্যক্ত সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলতে হতো।”
এক ট্রাক চালক বলেন,
“অনেক দিন কষ্ট করেছি। এখন আল্লাহর রহমতে ভালো লাগছে। তবে রাস্তা ঠিক না হলে আবার ভোগান্তি বাড়বে।”