শহিদুল ইসলাম, লন্ডন থেকে:
আন্তর্জাতিক সমুদ্র চলাচল সংস্থা (IMO)-এর কাউন্সিল নির্বাচনে পুনঃনির্বাচনের জন্য প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। সোমবার (৮ জুলাই) সংস্থার লন্ডনস্থ প্রধান কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থিতা উপস্থাপন করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ।
বাংলাদেশ এবারে ‘সি’ ক্যাটাগরিতে প্রার্থী হয়েছে, যেখানে ২৭টি দেশের মধ্যে থেকে ২০টি দেশ নির্বাচিত হবে। IMO-র কাউন্সিল তিনটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত—‘এ’, ‘বি’ এবং ‘সি’। ‘সি’ ক্যাটাগরিতে সাধারণত সামুদ্রিক পরিবহন ও নৌ চলাচলের আগ্রহী দেশগুলো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ‘সি’ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ ছাড়াও নির্বাচিত হয়েছিল—বাহামা, চিলি, সাইপ্রাস, ডেনমার্ক, মিশর, ফিনল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, জ্যামাইকা, কেনিয়া, মালয়েশিয়া, মাল্টা, মেক্সিকো, মরক্কো, পেরু, ফিলিপাইন, কাতার, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর এবং তুর্কিয়ে।
প্রার্থিতা উপস্থাপনের সময় উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও IMO-তে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আবিদা ইসলাম, সংস্থার মহাসচিব আর্সেনিও ডমিনগুয়েজ এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিরা।
নৌপরিবহন সচিব বলেন, “বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী একটি সামুদ্রিক জাতি হিসেবে বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম ও মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর শুধু বাংলাদেশের নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার সামুদ্রিক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ খাত এবং বিশ্বব্যাপী কর্মরত প্রায় ২১,০০০ নাবিক আমাদের গর্ব। এদের মধ্যে নারীর অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। পরিবেশবান্ধব জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণেও বাংলাদেশ শীর্ষে রয়েছে, যা বৈশ্বিক চাহিদার প্রায় অর্ধেক পূরণ করছে।”
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে IMO-তে পুনঃনির্বাচিত হলে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তা হলো:
- নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সামুদ্রিক অনুশীলন উৎসাহিত করা,
- পরিবেশবান্ধব জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণকে সমর্থন,
- সামুদ্রিক খাতে নারীর ক্ষমতায়ন,
- আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা জোরদার করা।
উল্লেখ্য, IMO হচ্ছে জাতিসংঘের একটি বিশেষায়িত সংস্থা, যার দায়িত্ব জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা, সুরক্ষা এবং সামুদ্রিক ও বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ প্রতিরোধ নিশ্চিত করা। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ১৭৬টি এবং বাংলাদেশ ১৯৭৬ সালে সদস্য পদ লাভ করে।