মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের বড়লেখার কুমারসাইল সীমান্ত দিয়ে সোমবার ভোরে নারী ও শিশুসহ ১৬ জনকে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে জোরপূর্বক পুশ-ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তাদের মধ্যে ১২ জন রোহিঙ্গা মুসলমান ও ৪ জন অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র ও বিজিবি জানায়,ভোররাতে বিএসএফ সদস্যরা কুমারসাইল সীমান্তের জিরো লাইনে এসব মানুষকে নিয়ে এসে জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। সকাল ৯টার দিকে সীমান্তবর্তী গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় বিজিবি লাতু বিওপি ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও পরিচয় যাচাইয়ের পর তাদেরকে বড়লেখা থানায় সোপর্দ করা হবে।
স্থানীয় উত্তর শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ জানান,“সকাল বেলা এলাকাবাসী আমাকে জানায় যে,কুমারসাইল গ্রামে অপরিচিত, ক্লান্ত ও আতঙ্কিত চেহারার কয়েকজন নারী-পুরুষ ও শিশু ঘোরাফেরা করছে। কথাবার্তা ও পোশাক-আচরণে কয়েকজনকে রোহিঙ্গা মনে হওয়ায় আমরা দ্রুত বিজিবিকে খবর দিই।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে বড়লেখা থানার ওসি (তদন্ত) হাবিবুর রহমান বিকেল ৫টার দিকে সাংবাদিকদের জানান, “বিজিবি আমাদের জানিয়েছে যে, তারা বিএসএফের পুশইনকৃত ১৬ জনকে আটক করেছে। এখনো তাদের থানায় হস্তান্তর করা হয়নি। সোপর্দ করা হলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,চলতি বছরের গত দুই মাসে বড়লেখা সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ভারতীয় বিএসএফ প্রায় ৫০০ জন রোহিঙ্গা ও অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিককে পুশ-ইন করেছে।
এই ঘটনায় সীমান্ত এলাকায় উদ্বেগ ও জনমনে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন;আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী জোরপূর্বক পুশ-ইন একটি স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। ভারত এমন আচরণ করে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপ সৃষ্টি করে আসছে। বারবার এমন ঘটনায় রাষ্ট্রীয় স্তরে তীব্র প্রতিক্রিয়ার অভাব নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।