পটুয়াখালীর দুমকিতে শহিদ জসীম উদ্দিনের কন্যা কলেজছাত্রী লামিয়াকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় তিন কিশোরের সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঢাকায় ফরেনসিক পরীক্ষার প্রতিবেদনে ধর্ষণে অংশগ্রহণকারীদের ডিএনএ মিলে গেছে বলে জানানো হয়েছে।
দুমকি থানার ওসি মো. জাকির হোসেন জানান, তদন্ত শেষে পুলিশের জমা দেওয়া প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, অভিযুক্ত সাকিব মুন্সী, সিফাত মুন্সী এবং ইমরান মুন্সী ওই ঘটনায় সরাসরি অংশ নেয়। ফরেনসিক রিপোর্টে সাকিব ও সিফাতের ডিএনএ প্রোফাইল সুনির্দিষ্টভাবে শনাক্ত হয়, এবং অন্যান্য সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তৃতীয় নমুনাটি ইমরানের বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, লামিয়ার বিবস্ত্র ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করে ওই কিশোররা পর্নোগ্রাফিরও অপরাধ করেছে। পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, ঘটনার দিন সহপাঠী ইমরান প্রথমে লামিয়াকে কৌশলে একটি বাগানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পরে সাকিব ও সিফাত সেখানে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণে অংশ নেয়।
এ ঘটনায় তিন কিশোরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
বেদনার সমাপ্তি
গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ি ফেরার পথে ধর্ষণের শিকার হন লামিয়া। ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়া লামিয়া ২৬ এপ্রিল ঢাকার বাসায় আত্মহত্যা করেন। তার আত্মহত্যা সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
মানবাধিকার কর্মী এবং স্থানীয়রা দোষীদের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তারা বলেন, “শহিদকন্যার উপর এমন নৃশংসতা দেশের বিবেক নাড়া দেওয়ার মতো ঘটনা। ন্যায়বিচারই লামিয়ার প্রতি শ্রদ্ধার একমাত্র উপায়।”
আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নেওয়া হবে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।