ডেস্ক রিপোর্ট
চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবের রহমান শামীমের অনুসারী হয়ে রাজনীতি না করার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা বিএনপির নেতা আলমগীর হোসেনকে কোণঠাসা করার চেষ্টায় তার নামে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ ও সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার বিএনপি নেতা আলমগীর হোসেন।
আলমগীর হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের রোষানলে পড়েছি। যে কারণে একটি চক্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেনস্থা করার জন্য অহেতুক নানাবিধ অভিযোগ তুলছেন। তেমনি এক চক্রান্তে আমাকে জড়িয়ে নোয়াখালীর হাতিয়া তমরোদ্দি লঞ্চঘাট নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। আমি এসব মিথ্যা অভিযোগ ও সংবাদের প্রতিবাদ আর নিন্দা জানাচ্ছি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৮ মার্চ ও ১৯ মার্চ বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ায় আলমগীর হোসেনকে জড়িয়ে প্রচারিত, “কোটি টাকার ঘাট বানিজ্য”, “সাবেক এমপির ঘনিষ্ঠদের দখলে হাতিয়ার তমরোদ্দি লঞ্চঘাট,পাল্টাপাল্টি মামলা” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে এসব সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে আলমগীর হোসেন বলেন, লঞ্চ ঘাটের সাথে আমার কোনো সংযোগ নাই। যদ্দূর জেনেছি গত বছরের ৫ আগস্টের পরবর্তী ইজারাদার গোলাম মাওলা কাজল আত্মগোপনে যাওয়ার পর এক মাস পর্যন্ত ঘাট চালিয়েছে ঘাটের শ্রমিক’রা। তারপর এক মাস চালিয়েছে বৈষম্যবিরোধী এক নেতার কথায় ইয়াকুব নামের এক লোক।
আলমগীর হোসেন বলেন, এই ইজারা বাতিলের জন্য তিনি নিজে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছেন, কিন্তু চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এর মেয়াদ থাকায় ইজারাটি বাতিল করা যায়নি। ফলে হাতিয়া উপজেলা প্রশাসন ইজারাদারের ভগ্নিপতি মিলাদের মাধ্যমে ঘাটের কার্যক্রম পরিচালিত করে যাচ্ছেন। এতে প্রতিদিন ঘাটের আয়ের অংশ ইজারাদারের প্রতিনিধি মিলাদ এবং শ্রমিকরা নিয়া নিচ্ছেন। আর এটি দখলে নেওয়ার জন্য তমরোদ্দি ইউনিয়ন বিএনপি’র বহিস্কৃত সভাপতি তানভীর হায়দার তান্না ও তার চাচা আলাউদ্দিন বাবু এবং আফসার উদ্দিন জিয়া কয়েকবার ঘাটে হামলা চালিয়েছে। কিন্তু স্থানীয় জনসর্থন এবং শ্রমিকরা পক্ষে না থাকায় তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। এসব ঘটনায় এদের বিরুদ্ধে হাতিয়া থানায় একাধিক মামলা হয়েছে।
আলমগীর হোসেন আরো বলেন, তার সমর্থক আরিফের দায়ের করা একটি মামলায় আফসার উদ্দিন জিয়া বর্তমানে জেলে রয়েছে। সুতরাং বাবু ও জিয়ার সাথে আমার কোনো সংযোগ নেই। বিএনপির বহিস্কৃত ইউনিয়ন সভাপতি তানভীর হায়দার, বাবু-জিয়া আপন চাচা ভাতিজা। তাদের মধ্যে সকল লাভজনক ক্ষেত্রে যখনই কোনো অমিল দেখা দেয় তখনই তারা আমার সাথে আজেবাজে ট্যাগ লাগিয়ে দেয়। তারা আওয়ামী শাসনামলে বিনা ভোটের এমপির সংস্পর্শে থেকে ব্রিকফিল্ড ব্যবসা থেকে শুরু করে ধান্দাবাজির সকল সুবিধা গ্রহন করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন। কিন্তু একটি মামলারও আসামী হননি। সেক্ষেত্রে আমি দুঃসময়ে বিএনপি করতে গিয়ে হামলা-মামলাসহ বহু নির্যাতনের শিকার হয়েছি।
এদিকে, নোয়াখালী জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব হারুনুর রশীদ আজাদের কাছে তমরোদ্দি ইউনিয়নের রুবেল ও মাহমুদসহ তিন ব্যক্তির লিখিত অভিযোগ সংক্রান্তে আলমগীর হোসেন বলেন, রুবেল ঘাট এলাকায় একটা চা দোকান করেন এবং তার সঙ্গে সাহেদ ভেন গাড়ি চালায়। এরা লঞ্চ ঘাটে হামলার জন্য দায়ী অভিযুক্ত আসামী। এদেরকে ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধচক্রের হোতা তানভীর হায়দার জেলা বিএনপি’র দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছেন।
দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া প্রসঙ্গে আলমগীর বলেন, বিএনপি’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পিছনে রাজনীতি না করার দায়ে এবং তার ডাকে সাড়া না দেওয়ায় প্রতিহিংসার জেরে উপজেলা পদ থেকে তাকে দুইবার শোকজ করা হয়েছে। কিন্তু দলের সদস্য পদ বহাল রয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে হেয় করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারে নেমেছে এই চক্র। লঞ্চঘাট বানিজ্য সম্বলিত উপরোক্ত শিরোনামে প্রকাশিত সকল সংবাদের তীব্র নিন্দা ও জোর প্রতিবাদ জানিয়েছেন হাতিয়া উপজেলা বিএনপির এই নেতা।
এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহবায়ক মাহবুব আলমগীর আলো বলেন, হাতিয়ায় আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে আমরা খতিয়ে দেখেছি, তবে এর কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।
জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব হারুন অর রশীদ আজাদ জানান, হাতিয়ার তমরোদ্দি লঞ্চ ঘাটে বিএনপি নেতা আলমগীর হোসেনের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এবং তার বিরুদ্ধে এলাকায় কোনো অনিয়মের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়নি।