হাবিবুর রহমান, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ:
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে পুনরায় গতি ফিরে পাচ্ছে নওগাঁর মান্দা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম। ‘দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল–২০২৫’ ঘোষণা করায় তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীদের মধ্যে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য ও উৎসাহ।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১৮ জুলাই (শুক্রবার) মান্দা উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়ন ফর্ম সংগ্রহ ৮ ও ৯ জুলাই দুপুর ১টা পর্যন্ত চলবে। ৯ জুলাই মনোনয়ন জমা ও যাচাই-বাছাই এবং ১০ জুলাই প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দ সম্পন্ন হবে।
পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ৬ সদস্যের একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন স ম আ আল কাফি তুহিন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—সরদার সাইফুল ইসলাম সাজু, গোলাম সারোয়ার স্বপন, মো. সাইদুর রহমান মোল্লা, ফজলুল বারি সাফি ও মো. এমরান হোসেন।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য গোলাম সারোয়ার স্বপন বলেন, “আমরা নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে কাউন্সিল সম্পন্ন করব। দলীয় দুঃসময়ে পাশে থাকা নেতাদের মূল্যায়নই হবে আমাদের অগ্রাধিকার।” আরেক সদস্য সাইদুর রহমান মোল্লা বলেন, “দীর্ঘদিন পর গণতান্ত্রিক চর্চার দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। এই কাউন্সিলকে আমরা কর্মীদের প্রত্যাশা পূরণের মঞ্চ হিসেবে দেখি।”
দীর্ঘদিন পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় সাংগঠনিক অস্থিরতা ও নেতৃত্ব সংকটে ভুগছিল মান্দা উপজেলা বিএনপি। আহ্বায়ক কমিটির ভেতরে বিভাজন, নেতৃত্বে অনিশ্চয়তা এবং কেন্দ্রীয় দিকনির্দেশনার অভাবে কর্মীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছিল।
তবে কাউন্সিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। সম্ভাব্য নেতাদের পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে বাজার ও মোড়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে প্রচারণা। চায়ের দোকান, বাজার ও পাড়া-মহল্লায় চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
এক যুবনেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, “আমরা চাই মাঠের নেতা, কাগুজে নয়। নেতৃত্বে পরিবর্তন না হলে সামনে আন্দোলনে মান্দা পিছিয়ে পড়বে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, “এই কাউন্সিল যদি স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়, তবে মান্দা শুধু নতুন কমিটিই পাবে না— বরং তৃণমূল থেকে সংগঠনের জন্য তৈরি হবে শক্ত ভিত্তি।”
উপজেলা জুড়ে এখন একটাই স্লোগান: “পূর্ণাঙ্গ কমিটি চাই, কর্মীর মর্যাদা চাই”। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এই কাউন্সিল হয়ে উঠেছে কর্মীদের প্রত্যাশা পূরণের প্রথম ধাপ।