সত্যজিৎ দাস (মৌলভীবাজার প্রতিনিধি):
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের বিক্ষোভ ও দেয়াল লিখনকে কেন্দ্র করে দায়েরকৃত মামলায় ৪ জন দীর্ঘদিনের প্রবাসী নেতাকে আসামি করায় এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন,থানার কার্যক্রম যেন এখনো পতিত আওয়ামী সরকারের পুরনো প্রেসক্রিপশনেই চলছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত১১ এপ্রিল মধ্যরাতে পৌর শহরের প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় কিছু মুখোশধারী ব্যক্তি ‘ছাত্রলীগ আসবে, রাজপথ কাঁপবে’, ‘শেখ হাসিনা আবার আসবে’ প্রভৃতি শ্লোগান দেয় এবং দেয়ালে লাল কালি দিয়ে লিখে রেখে যায়। ঘটনাটি থানার কয়েকশ’ ফুট দূরেই ঘটলেও কেউ বাধা দেয়নি।
পরদিন ১২ এপ্রিল রাতে বড়লেখা থানার এসআই সুব্রত চন্দ্র দাস সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ১৪০-১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো, মামলার তালিকায় থাকা ৫ নম্বর আসামি জামিল আহমদ ২০১৭ সাল থেকে সৌদি আরবে আছেন,৮ নম্বর আসামি কামরান আহমদ ২০২১ সাল থেকে দুবাই প্রবাসী, ৯ নম্বর আসামি আতাউল গনি উসমানী ২০২২ সাল থেকে স্পেনে এবং ১০ নম্বর আসামি আপ্তাব আহমদ ২০২৩ সাল থেকে কাতারে বসবাস করছেন।
এ ঘটনায় প্রবাসী সাংবাদিক নুরুল ওয়াহিদ ও কমিউনিটি নেতা আহমেদ রিয়াজ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “যারা কয়েক বছর ধরে বিদেশে, তারা বড়লেখায় এসে থানার সামনে বিক্ষোভ মিছিল আর দেয়াল লিখন করবে—এটা হাস্যকর! প্রকৃতপক্ষে, পুলিশ সাধারণ আওয়ামীপন্থী সমর্থকদের নামে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা দিয়ে হয়রানি ও গ্রেফতার বাণিজ্য করছে।” তারা অবিলম্বে প্রবাসী চার নেতার নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানান।
এ বিষয়ে ওসি আবুল কাশেম সরকার জানান, “নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আঁধারে বিক্ষোভ করেছে এবং দেয়ালে শ্লোগান লিখেছে। ইতোমধ্যে একজন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”
তবে মামলার মেরিট নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন মহলের মতে,এটি শুধুমাত্র একটি দলীয় প্রতিহিংসা নয়, বরং প্রমাণ ছাড়া নিরীহ লোকদের হয়রানির উদাহরণও বটে। এই ঘটনায় প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও তদন্তের দাবি উঠেছে সর্বমহল থেকে।