আব্দুস সালাম মোল্লা, ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের হরিরামপুর ইউনিয়নের আরজখার ডাঙ্গী গ্রাম থেকে ফকির ডাঙ্গী জামে মসজিদ পর্যন্ত নির্মাণাধীন এইচবিবি (হিসাব নির্ভর ব্লক বসানো) রাস্তায় ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসী জানান, কাজের শুরু থেকেই অত্যন্ত নিম্নমানের ইট, কম পরিমাণ বালু এবং পর্যাপ্ত মাটি ছাড়া রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, প্রকল্পটি মোট এক কিলোমিটার দীর্ঘ, যার মধ্যে পদ্মা নদীর এক পাড়ে ৫৪০ মিটার এবং অপর পাড়ে ৪৬০ মিটার রাস্তা নির্মাণের কথা রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮১ লাখ ১১ হাজার ২৬৫ টাকা। নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ পান ‘মেসার্স শোভন কম্পিউটার’ নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
পাইপ কালভার্ট তিনবার ভেঙেছে
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, রাস্তায় তিনটি পাইপ কালভার্ট বসানোর শর্ত থাকলেও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে তা নির্মাণের তিন দিনের মাথায়ই ভেঙে পড়ে। বর্ষার স্রোতে এসব কালভার্ট পুনরায় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন এলাকাবাসী।
প্রশাসনের হস্তক্ষেপ
অভিযোগের পর স্থানীয় প্রশাসন সরেজমিন পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় এবং পরবর্তীতে ভালো মানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আ. রাজ্জাক বলেন, “অভিযোগের পর ইউএনও ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। পরে আমরা মানসম্মত ইট ও বালু ব্যবহার করেছি।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা খাতুন জানান, “আমি সরেজমিনে গিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী পরিবর্তন করে ভালো মানের ইট, বালু ও মাটি ব্যবহার করতে বলেছি। তবে পরবর্তীতে প্রকৃতপক্ষে কী হয়েছে তা খোঁজ না নিয়ে বলতে পারছি না।”
জনপ্রতিনিধির অভিযোগ
গাজীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইয়াকুব আলী বলেন, “নির্মাণে ছয় ইঞ্চি বালুর পরিবর্তে দুই ইঞ্চিও ব্যবহার করা হয়নি। রাস্তার মাটি ভরাটের জন্য সাত লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবে মাটি ফেলা হয়নি। পাইপ কালভার্ট তিনবার নির্মাণ করেও তিনবারই ভেঙেছে। রাস্তায় এখনো পেলাসাইটিংও করা হয়নি।”
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুদেব কৃষ্ণ বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পর উন্নত মানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করা হয়েছে।”
এলাকাবাসীর দাবি
এলাকাবাসী প্রকল্পের সুষ্ঠু তদন্ত এবং রাস্তার দীর্ঘস্থায়ী স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে পূর্ণাঙ্গ কারিগরি পরিদর্শন ও জবাবদিহিতার দাবি জানিয়েছেন।