জিয়াউর রহমান জিয়া, মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা খুশি খাতুনের বিরুদ্ধে নকল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি, জাল স্বাক্ষর, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, মৌলিক প্রশিক্ষণে অনিয়ম এবং প্যারেডের ভাতা লোপাটসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
শ্যামকুড় ইউনিয়নের আনসার ভিডিপি দলনেত্রী নাইমা আক্তার এবং মান্দারবাড়িয়া ইউনিয়নের সহকারী আনসার প্লাটুন কমান্ডার মাসুন রানা লিখিতভাবে এসব অভিযোগ দায়ের করেছেন জেলা আনসার কমান্ড্যান্টসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।
মূল অভিযোগসমূহ:
- ভুয়া এনআইডি ও প্রশিক্ষণ সনদ:
অভিযোগে বলা হয়েছে, খুশি খাতুন আর্থিক বিনিময়ে বয়সসীমা উত্তীর্ণ ব্যক্তিদের ভুয়া জন্মতারিখ সংযোজন করে মৌলিক প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেন। যেমন—চতুর্থ ধাপের প্রশিক্ষণার্থী মিজানুর রহমানের প্রকৃত জন্ম তারিখ ২২ জুলাই ১৯৮৪ হলেও, তাকে প্রশিক্ষণের উপযোগী করতে জন্মতারিখ ২২ জুলাই ২০০০ দেখানো হয়। - ভুয়া সনদ বিক্রি ও জালিয়াতি:
দলনেত্রী নাইমা আক্তার জানান, স্থানীয়ভাবে বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং ঠিকানা জালিয়াতির মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থীদের নির্বাচন করা হয়েছে। কাজিরবেড় ইউনিয়নের দলনেতা খাইরুল আলম এ কাজে খুশি খাতুনকে সহায়তা করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। - প্যারেড ভাতা আত্মসাৎ:
মাসুন রানা অভিযোগ করেন, ২৬ মার্চ ২০২৫-এর জাতীয় দিবসের প্যারেডে ৩২ জন অংশগ্রহণের কথা থাকলেও মাত্র ১০ জন অংশ নেন। অথচ মাস্টাররোলে ৩২ জনের নাম দেখিয়ে জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে ভাতা উত্তোলন করা হয়। সংশ্লিষ্টদের মধ্যে অনেকে জানান, তারা প্যারেডে অংশ নেননি, এমনকি কিছুই জানতেন না—তাদের নাম এবং স্বাক্ষর জাল করে অর্থ তোলা হয়েছে। - নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও ঘুষ:
আরও অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন দায়িত্ব যেমন নির্বাচন, দুর্গাপূজা ও ঈদের সময় ডিউটি বরাদ্দ এবং নিয়োগ বাণিজ্যে অর্থ লেনদেন হয়ে থাকে।
অভিযুক্তের প্রতিক্রিয়া:
খুশি খাতুন সাংবাদিকদের জানান, “আমি পরিস্থিতির শিকার। অনেক সময় স্টাফদের উপর বিশ্বাস করে যাচাই না করায় কিছু ভুল হয়েছে। কেউ কেউ এসব সুযোগ নিয়ে আমাকে ফাঁসাতে চাইছে।” তবে তিনি স্বীকার করেন, কিছু ভুল হয়ে থাকতে পারে এবং তদন্ত হলে তিনি সব দিক থেকেই সহযোগিতা করবেন।
কর্তৃপক্ষের অবস্থান:
ঝিনাইদহ জেলা আনসার-ভিডিপি কমান্ড্যান্ট মিজানুর রহমান বলেন, “বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্ত শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”