বহুল আলোচিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’–এর আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নির্ধারণে কাজ শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সংলাপে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন বিশেষজ্ঞদের মতামত নিচ্ছে। এরই মধ্যে অনানুষ্ঠানিকভাবে কয়েকজন অভিজ্ঞ ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ সপ্তাহে আরও কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বৈঠক করার পরিকল্পনা রয়েছে।
শনিবার রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সনদের সমন্বিত চূড়ান্ত খসড়া পাঠিয়েছে কমিশন। এতে মোট ৮৪টি বিষয়ে ঐকমত্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৮ দফা অঙ্গীকারনামায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে— “ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’–এর পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।” সনদ সংক্রান্ত চূড়ান্ত ব্যাখ্যার এখতিয়ার থাকবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ওপর।
চূড়ান্ত খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবগুলো কোনো বিলম্ব ছাড়াই পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কার্যকর করতে হবে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে আগামী বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেল ৪টার মধ্যে মতামত পাঠাতে বলা হয়েছে। এরপর চলতি সপ্তাহের শেষে বা আগামী সপ্তাহে কমিশনের সঙ্গে দলগুলোর তৃতীয় দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে।
কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “বেশিরভাগ দলই সনদের খসড়ায় একমত হয়েছে। কয়েকটি দল ৯–১০টি বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। আমরা আশা করি গণতন্ত্র ও বৃহত্তর স্বার্থে তারাও চূড়ান্ত খসড়া মেনে নেবে।”
সূত্র জানায়, সংস্কার প্রশ্নে কমিশন ও দলগুলোর আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে আইনি সুরক্ষার আওতায় আনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সনদের কোনো শব্দ বা নীতিমালা যদি সংবিধান বা বিদ্যমান আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়, তবে সনদের প্রাধান্য বহাল থাকবে।
প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মোট ৩৫টি রাজনৈতিক দল মতামত পাঠিয়েছে, যার ভিত্তিতে দুই দফায় আলোচনা হয়। ৩২টি দলের সঙ্গে প্রথম পর্যায়ে ৪৭টি বৈঠক এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩০টি দলের সঙ্গে ২৩টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে সংসদের উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে একশ আসন রাখার প্রস্তাবের বিরোধিতা করা হয়েছে। তবে কমিশনের দাবি, এ আপত্তি সত্ত্বেও অন্তত ১৯টি বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে উঠেছে।
আগামী বৈঠকের পর জুলাই জাতীয় সনদের পূর্ণাঙ্গ ঘোষণা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।

