মারুফ সরকার, প্রতিবেদক:
রামপুরা ও হাতিরঝিল থানা ইমাম-খতিব উলামা পরিষদ এর সভাপতি মুফতী হাফিজুদ্দীন সাহেব বলেন, নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পুরোটাই বাতিল করতে হবে। নারী সংস্কার কমিশন কর্তৃক পেশকৃত প্রস্তাবনাগুলো সবই সুস্পষ্ট কুরআন-সুন্নাহ, আদর্শ সমাজ ও সুস্থ সংস্কৃতিবিরোধী। বিভিন্ন ধর্মের নিজস্ব পারিবারিক আইন রয়েছে। হাজার বছর ধরে চর্চিত সে আইনকে বাতিল করে অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দেয়া বাতুলতা ছাড়া বৈ কি। প্রকারান্তরে নারী কমিশন একক স্যেকুলার পারিবারিক আইন প্রবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছে। এটি ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে ধর্মীয় অনুশাসনের হস্তক্ষেপ এবং সংবিধানের ধর্মীয় স্বাধীনতার মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক।
আজ ২৩ মে’ ২৫, শুক্রবার বাদ জুমা রামপুরা ব্রীজ থেকে মালিবাগ মোড় পর্যন্ত নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিলের দাবীতে আয়োজিত বিশাল মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ধর্মীয় বিশ্বাস, পারিবারিক শিক্ষা, সামাজিক মূল্যবোধ অপসারণ করাই পশ্চাদমুখিতা এবং প্রাচীন যুগের অসভ্য আচরণে আবার ফিরে যাওয়া। সভ্যতা মানে শুধু আধুনিক পোশাক নয়, বরং মর্যাদা, আত্মসংযম আর নিজের বিশ্বাসকে সম্মানের সাথে ধারণ করা। নিজের শালীনতা রক্ষা করে এগিয়ে যাওয়া; আর উল্টোটা হলো পশ্চাৎপদতায় ফেরা।
অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, মুফতি হেমায়েতুল্লাহ কাসেমী, মুফতি আমিনুল ইসলাম,
মুফতি মোহাম্মদ আলী, মুফতি ফরিদুল ইসলাম, মুফতি মাহফুজুর রহমান, মুফতী আনিসুর রহমান, মুফতি তাসফীন মাহমুদ, মুফতী সাইফুল্লাহ, মুফতি জামিল, মুফতী হোসাইন আহমাদ, মুফতী মাহমুদ জাকী, হাফেজ মাওলানা মুফতী আরমান প্রমুখ।
অন্যান বক্তারা বলেন, নারীকে তালাকের সমানাধিকার দেয়ার যে প্রস্তাব নারী সংস্কার কমিশন দিয়েছে, তার মাধ্যমে মূলত ইসলাম নির্ধারিত স্বামী-স্ত্রীর তালাক ব্যবস্থাকে বদলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
যৌনকর্মীদের শ্রমিক স্বীকৃতির মাধ্যমে ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা, অশ্লীলতা ও লুচ্চামীকে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক বৈধতা দেয়ার পাঁয়তারা করছে। এসব নোংরামী এবং জাতীয় সংস্কৃতি পরিপন্থী প্রস্তাব কোন মুসলমান তো ভালো সভ্য কোন মানুষ মেনে নিতে পারেনা। তথাকথিত নারী কমিশনের প্রস্তাব কোটি কোটি নারীকে অপমানিত করেছে। মা-বোনদেরকে চরমভাবে ট্রমায় ফেলে দিয়েছে। তাদের হৃদয়ে কুঠারাঘাত করেছে।
মানববন্ধন থেকে সরকারের কাছে ৬টি দাবী পেশ করা হয়। অবিলম্বে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত কুরআন বিরোধী সুপারিশগুলো বাতিল করতে হবে।
নির্বাচিত শীর্ষ মুফতিগণের মাধ্যমে সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো যাচাই-বাছাই করাতে হবে। সর্বক্ষেত্রে নারীর জান-মাল সম্মান ও সম্ভ্রমের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পতিতা, ছিন্নমূল, বিধবা, অসহায় ও এতিম কন্যা সন্তানের সম্মানজনক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি বিধবা,অসহায় এবং বয়স্কা নারীদের যৌক্তিক আর্থিক ভাতা প্রদান করতে হবে। গুম-খুন,ধর্ষণ ও শিশু ধর্ষণের মত পৈশাচিক অন্যায়ের প্রতিকারে শরিয়া ভিত্তিক বিচার ব্যবস্থা চালু করতে হবে। যৌতুক, ইভটিজিংসহ যৌন হয়রানিমূলক অপরাধের শাস্তি দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর করতে হবে